বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ || ১৩ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১৬:৩৯, ১ আগস্ট ২০২১

আফগানিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ তিন শহরে তালেবানের হামলা

আফগানিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ তিন শহরে তালেবানের হামলা

আফগানিস্তানের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে হামলা চালিয়েছে সশস্ত্র জঙ্গি গোষ্ঠি তালেবান। শহরগুলো হলো হেরাত, লস্করগাহ ও কান্দাহার। অতি গুরুত্বপূর্ণ এই তিন শহর ঘিরে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের লড়াই ক্রমেই জোরদার হচ্ছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, হেরাত, লস্করগাহ ও কান্দাহারের অংশবিশেষে এরইমধ্যে প্রবেশ করেছে তালেবান।

এর আগে আফগান কর্মকর্তারা বলেছিলেন মার্কিন বিমান হামলার সহায়তা নিয়ে তারা তালেবান বিদ্রোহীদের পিছু হঠতে বাধ্য করেছেন। তবে ফের তুমুল লড়াই শুরু হয়েছে।

সরকার সমর্থক ৭০ বছরের একজন কমিউনিটি নেতা ইসমাইল খান বলেছেন, হেরাত রক্ষা করতে তিনি মিলিশিয়াদের সাহায্য নিচ্ছেন। দক্ষিণেও তালেবান তাদের আক্রমণ তীব্র করেছে।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বর নাগাদ আফগানিস্তান থেকে প্রায় সব বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে ঘোষণা আসার পরই তালেবান দেশটির সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা ও বিভিন্ন এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠায় অভিযান জোরদার করে।

এরইমধ্যে তালেবান বিশেষ করে আফগানিস্তানের গ্রামীণ এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। তারা এখন গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো দখলের চেষ্টা করছে।

যে শহরগুলোয় তালেবান যোদ্ধারা প্রবেশ করেছে, সেগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত। দেশটির সরকারি বাহিনী এই শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ কতটা সময় ধরে রাখতে পারবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। এ ছাড়া যুদ্ধের কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোয় মানবিক বিপর্যয় দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গত দুই মাসে তালেবান দেশটির অর্ধেকের বেশি এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। পাকিস্তান ও ইরানের সঙ্গে থাকা গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত–ক্রসিংও তারা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তবে তালেবান এখন পর্যন্ত কোনো প্রাদেশিক রাজধানী দখল করতে পারেনি। কিন্তু এখন তারা সেই লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছে।

বিবিসির বিশ্লেষণে বলা হয়, তালেবানের বর্তমান লক্ষ্য আফগান শহরগুলো দখল করা। তারা এখন যেসব শহর দখলের চেষ্টা করছে, তার মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলীয় হেলমান্দ প্রদেশের রাজধানী লস্করগাহের অবস্থা সবচেয়ে নাজুক।

লস্করগাহে সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আফগান সেনাদের সঙ্গে তালেবানের লড়াই চলছিল। লড়াইয়ে প্রাণ হারানোর আশঙ্কায় বাড়িঘর ছাড়ছিলেন স্থানীয় অনেক বাসিন্দা।

কান্দাহারের এক সাংসদ বলেছেন, তালেবানের হাতে এই শহরের পতনের গুরুতর ঝুঁকি আছে। শহরের হাজারো অধিবাসী ইতিমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। শহরে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।

অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর হেরাতেও সংঘর্ষ জোরদার হয়েছে। শহরটির দক্ষিণাংশে তালেবান প্রবেশ করেছে। শহরের অন্তত পাঁচটি স্থানে লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে।

৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের কাজ শেষ করা হবে বলে সম্প্রতি জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত মে মাসে সেনা প্রত্যাহারের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরুর পর থেকে তালেবান যোদ্ধারা হামলা ও দখল অভিযান জোরদার করে।

আফগানিস্তানে পশ্চিমা-সমর্থিত গনি সরকারকে উৎখাত করে ইসলামি আইন চালু করতে চায় তালেবান। তালেবানের দাবি, তারা ৮৫ শতাংশ এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।

আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনী ও মিত্রদের সেনা প্রত্যাহারের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরুর পর দেশটিতে চলা সহিংসতায় অনেক বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। এটি থামানো না গেলে দেশটিতে গত এক দশকের মধ্যে সাধারণ মানুষের সর্বোচ্চ প্রাণহানি ঘটতে পারে বলে সতর্ক করেছে ইউএনএএমএ।

জাগ্রত জয়পুরহাট

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ