বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ || ১৩ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১২:২৩, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

মধু উৎপাদনে কালামের বাজিমাত, আয় ৭ লাখ!

মধু উৎপাদনে কালামের বাজিমাত, আয় ৭ লাখ!

খুলনার ফুলতলা উপজেলার দামোদর গ্রামের আবুল কালাম সরদার মধু উৎপাদন করে সফল হয়েছেন। বর্তমানে তার উৎপাদিত মধু দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও রফতানি হচ্ছে। বছরে প্রায় ৭ লাখ টাকা আয় করছেন। তর সফলতার জন্য জাতীয় পুরষ্কারও পেয়েছেন।

জানা যায়, মধু চাষ করে শুধু তিনি লাভবান হননি। অন্যদেরও স্বাবলম্বী করতে ভূমিকা রেখেছেন। অনেক নারী-পুরুষকে মধু চাষের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। আবুল কালাম তাদের মৌমাছি পালন, মধু উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের সকল কৌশল হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। তার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকে মধু চাষ করে স্ববলম্বী হয়েছেন।

মৌ চাষি আবুল কালাম সরদার বলেন, এসএসসি পাশ করে মৌচাষের উপর বিসিক (বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প) এর আওতায় ২ মাসের প্রশিক্ষণ নেই। আর্থিক অস্বচ্ছতার কারণে চাষ করতে পারিনি। ২০০২ সালে বিসিক থেকে ২৮ হাজার টাকা দিয়ে ১১ টি বক্স ও ৩৩টি ফ্রেম মৌমাছিসহ কিনে চাষ শুরু করি। প্রথম বছরে ৬০ হাজার টাকা লাভ হলে পরের বছর আরো ৩৫টি বক্স যোগ করে চাষ বৃদ্ধি করি। পরের বছর লাখ টাকা আয় হয়। এভাবে পর্যায়ক্রমে বর্তমানে এসে ২৫০ বাক্সে ফ্রেম সংখ্যা দাড়িয়েছে আড়াই হাজারে। বার্ষিক মধু উৎপাদনের পরিমান দাড়িয়েছে দুই শত মণ।

তিনি আরো বলেন, মধুর মৌসুম ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে চলে এপ্রিল মাস পর্যন্ত। বিভিন্ন ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করি। এতে একেক সময় একেক জায়গায় যেয়ে অবস্থান করতে হয়। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি সরিষা ফুলের মধু সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, জামালপুর ও কুড়িগ্রাম থেকে পাওয়া যায়। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ধনিয়া ফুলের মধু শরিয়তপুর, ফরিদপুর, ও রাজবাড়ী থেকে সংগ্রহ করতে হয়। এভাবে বিভিন্ন জেলা থেকে বিভিন্ন ফুলের মধু সংগ্রহ করে থাকি। বছরের বাকি ৬ মাস মৌমাছিকে তোলা খাবার হিসাবে চিনি ও বিগত বছরের মধু খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখতে হয়।

আবুল কালাম সরদার আরো বলেন, মৌমাছির প্রধান শত্রু হলো ফিঙে রাজা, সুইচোরা পাখি ও ভিমরুল। গুলতি দিয়ে ফিঙে, জাল পেতে সুইচোরা ও বাসা পুড়িয়ে ভিমরুল দমন করতে হয়। মৌসুমে বাক্স প্রতি ১ থেকে দেড় মণ মধু উৎপাদন হয়। গত মৌসুমে উৎপাদিত দুই শত মণ মধু গড়ে ২৫০ টাকা কেজি হিসাবে পাইকারি মূল্যে ২০ লাখ টাকায় বিক্রি করি। এর মধ্যে ৬ জন কর্মচারীর বেতন, পরিবহণ খরচ, খাবারসহ মৌমাছি পালন, স্থান ম্যানেজ, আয়কর প্রদানসহ সকল খরচ বাদ দিয়ে নীট মুনাফা ছিল ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা। উৎপাদিত মধু দেশীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে এখন দেশের বাইরে সৌদি, কাতার, কুয়েতে রপ্তানি করছি।

জাগ্রত জয়পুরহাট

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ