• বুধবার ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ||

  • আশ্বিন ১২ ১৪৩০

  • || ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

জাগ্রত জয়পুরহাট

শীতের মিষ্টি রোদে পিঠা খাওয়ার ধুম

জাগ্রত জয়পুরহাট

প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর ২০২২  

শীতকালে জমে পিঠা-পুলির উৎসব। শীত মানেই বাঙালির পিঠা খাওয়ার ধুম। ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, সেমাই পিঠা ইত্যাদি কত শত রকমের পিঠার সমাহার। শীতের সকালে রোদ্দুরে বসে পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। গরম গরম ধোঁয়া ওঠা পিঠা-পুলির যে স্বাদ সেটা অন্য সময় পাওয়া যায় না।

দিনাজপুরের হিলির দক্ষিণপাড়া, মহিলা কলেজপাড়া, জিলাপি পট্টি, চুড়িপট্টি, বাজার, সিপি, চারমাথা, পালপাড়া, ডাঙ্গাপাড়া ও চন্ডিপুরসহ বিভিন্ন স্থানে জমে উঠেছে সকালে পিঠা বিক্রি। দোকানিরা নানান জাতের পিঠা-পুলির পরসা সাজিয়ে বিক্রি করছেন এসব দোকানে। আর ক্রেতারাও ৫ থেকে ১০ টাকার মধ্যেই পাচ্ছেন এসব পিঠার স্বাদ।

শীতকালে প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে এসব দোকানে তৈরি হতে শুরু করে ভাপা ও চিতই পিঠা। চিতই পিঠার সঙ্গে কালোজিরা, ধনে পাতা, বাদাম ও তিলের ভর্তা আগে থেকেই তৈরি করে নিয়ে আসেন দোকানিরা। আর ভাপা পিঠা তৈরিতে ব্যবহার হয় আখের কিংবা খেজুরের গুড়। 

রোববার ভোর সাড়ে ৬টায় হিলির মহিলা কলেজ পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, শিশু কিশোর থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী মানুষ ভিড় করেছেন শ্রীমন বিবির পিঠার দোকানে। মাটির হাড়িতে এই দোকানে তৈরি হচ্ছে ভাপা পিঠা। হাড়ি থেকে নামাতেই তা প্লাস্টিকের পিরিচে পরিবেশন করা হচ্ছে ক্রেতাদের সামনে।

শ্রীমন বিবি বলেন, ‘ভোর ৫ টায় ঘুম থেকে উঠে চুলা জ্বালই। প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ কেজি ভাপা পিঠার জন্য চালের আটা করি। আবার বিকেলে চিতই পিঠা তৈরি করি। একা মানুষ, স্বামী অনেক আগে মারা গেছে। ছেলেরা সবাই বিয়েশাদী করে ভিন্ন হয়ে সংসার করে। এই ব্যবসা করে দিনে যা লাভ হয় তা দিয়ে একাই চলি।’

পিঠা কিনতে আসা শিশু রনি বলেন, ‘সকাল হলেই প্রতিদিন বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে পিঠা কিনতে আসি। ভাপা পিঠা খেতে আমার খুব ভালো লাগে।’ নাহিদা আক্তার বলেন, ‘শ্রীমন চাচির পিঠার অনেক স্বাদ। প্রতিদিন বাড়ির জন্য ৫টা করে ভাপাপিঠা নিয়ে যাই। আবার

বিকেল হলে চিতই পিঠা কিনতে আসি। চিতই পিঠার স্বাদ কালোজিরা, বাদাম ও ধনেপাতা চাটনির সঙ্গে আরো বেড়ে যায়।’ নছিমন বেগম নামের এক প্রবীন বলেন, ‘যুগ পাল্টায়ছে, এখন সবকিছুই আধুনিক। আমাদের সময় বাজার ঘাটে এভাবে পিঠা বিক্রি হতো না। শীত আসলেই বাড়ি বাড়ি নানান জাতের পিঠা তৈরির ধুম পড়তো। সেই সময় জামাই-বেটির পিঠা খাওয়ার দাওয়াত পড়তো। নতুন ধানের চালের পিঠা আর খেজুর রসের পিঠা রাত জেগে তৈরি করতাম। আজ আর সেই দিন নেই। তবে শীত আসলেই মনে পড়ে হারিয়ে যাওয়া দিনগুলোর কথা।’

জাগ্রত জয়পুরহাট
জাগ্রত জয়পুরহাট