বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ || ১৩ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১২:২৬, ১১ জানুয়ারি ২০২৩

ঠাকুরগাঁওয়ে হা-ডু-ডু খেলা দেখতে জনতার ভিড়

ঠাকুরগাঁওয়ে হা-ডু-ডু খেলা দেখতে জনতার ভিড়

বাংলাদেশের জাতীয় খেলা হা-ডু-ডু। কালের বিবর্তনে বিলুপ্ত প্রায় এ ঐতিহ্যবাহী খেলা। তবে হারিয়ে যাওয়া এ ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে এখনো বেশকিছু এলাকায় এ খেলার আয়োজন করা হয়। সম্প্রতি ঠাকুরগাঁওয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চল রাণীশংকৈল উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের রাঘোবপুর মন্ডল পাড়ায় স্থানীয়রা মাসব্যাপী এ খেলার আয়োজন করেছে। মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে এ টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা। এসময় খেলা দেখতে ভিড় করেছে নারী-পুরুষসহ ছোটবড় সব বয়সের মানুষ।

খেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাণীশংকৈল উপজেলার চেয়ারম্যান মো. শাহরিয়ার আজম মুন্না। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. সোহেল রানা, ৫ নম্বর বাচোর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল হক, নন্দুয়ার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহনেওয়াজ প্রমুখ।

খেলা শেষে সন্ধ্যায় চ্যাম্পিয়ন কামার পুকুর দল ও রানার্সআপ ফুটানি টাউন দলের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। মাসব্যাপী এ টুর্নামেন্টের প্রথম ধাপের খেলা অনুষ্ঠিত হয় ২০২২ সালে ৫ নভেম্বর।

খেলা দেখতে আসা স্থানীয় ইকবাল মাহমুদ নামে এক যুবক বলেন, ফুটবল, ক্রিকেটসহ অন্যান্য যে খেলাগুলো আছে সেগুলোতে মানুষের বেশ আগ্রহ। কিন্তু আমাদের জাতীয় খেলা হা-ডু-ডু হলেও এ খেলা তেমন হয় না। খেলা না হওয়ার কারণে নতুন প্রজন্ম এ খেলা সম্পর্কে জানতে পারছে না। আর যারা জানেন তারা খেলায় আগ্রহ হাড়িয়ে ফেলছেন। আমাদের এখানে হা-ডু-ডু খেলার আয়োজন করা হয়েছিল স্থানীয়ভাবে আজ তার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হলো। আর খেলা দেখতে অনেক মানুষের সমাগম হয়েছে। কারণ অনেকে এই খেলা সম্পর্কে জানেই না। তাই বড়দের পাশাপাশি শিশু, কিশোর-কিশোরীরাও খেলা দেখতে এসেছে। আমাদের দেশের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে অন্যান্য খেলার মতো এই খেলার প্রশিক্ষণ ও আয়োজন করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করছি।

খেলা দেখতে আসা রোমাকান্ত পাল নামে এক যুবক বলেন, শুনেছিলাম এ এলাকায় আগে বেশ হা-ডু-ডু খেলা হতো। কিন্তু কখনো চোখে দেখিনি। আজকে দেখলাম। দেখে অনেক ভালো লাগলো। আমি খেলাটিকে ধরে রাখার জোর দাবি জানাচ্ছি।

রেজিয়া খাতুন নামে এক গৃহবধূ বলেন, ‘এখানে প্রায় ১০-১১ বছর আগে এ খেলা হতো। কিন্তু হঠাৎ করে খেলাটি আবার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আবার খেলাটি চালু হয়েছে ভালো লাগছে। তাই সপরিবারে খেলা দেখতে এসেছি।

খেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, খেলাটি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছিল, তাই আমার ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় খেলাটিকে ধরে রাখার জন্য এ আয়োজন করা। মাসব্যাপী এ টুর্নামেন্টের প্রতিটি খেলায় দর্শকের উপচেপড়া ভিড় ছিল। এই যে মাঠে এতো দর্শক, তারা খেলা দেখে যে আনন্দ পাচ্ছে এটাই আমাদের সার্থকতা। স্থানীয় ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ খেলাটিকে ধরে রাখা সম্ভব হবে।

ফাইনাল খেলার প্রধান অতিথি রাণীশংকৈল উপজেলার চেয়ারম্যান মো. শাহরিয়ার আজম মুন্না বলেন, হা-ডু-ডু খেলাটি আমাদের এলাকা থেকে হাড়িয়ে যেতে বসেছিল। এ খেলাকে দেশের প্রতিটি জেলায় ও উপজেলায় পুনরুজ্জীবিত করতে সরকারকে অনুরোধ করছি। আমি এ খেলাকে টিকিয়ে রাখতে উপজেলার পক্ষ থেকে সব সময় পাশে থাকবো।

জাগ্রত জয়পুরহাট

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ