শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ || ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১২:৫৭, ৩১ মে ২০২৩

এক গাছে আট জাতের আম!

এক গাছে আট জাতের আম!

একটি কিংবা দুইটি জাত নয়। মোট আট জাতের আম ধরেছে এক গাছেই। এমন বৈচিত্র্যময় আট জাতের সংমিশ্রণের আম গাছের দেখা মিলবে মাদারীপুরের মোস্তফাপুর হর্টিকালচার সেন্টারে। কৌতুহলবসত কলম পদ্ধতিতে অভিনব এ আম গাছ উদ্ভাবন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এখানকার কর্মকর্তারা। এখান থেকে আরও গাছ তৈরির মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী কৃষকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে হর্টিকালচার কর্তৃপক্ষের।

হর্টিকালচার সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের দিকে একটি উন্নত জাতের আম গাছ রোপণ করা হয় মাদারীপুরের হর্টিকালচার সেন্টারে। তবে ছয় মাসের মাথায় গাছটির প্রধান শাখাটি মারা গেলে গোড়ায় দিক থেকে গাছটিতে নতুন করে আরও দশটি ডাল গজায়। গজানো সেই ডালে কলম তৈরির মাধ্যমে দশটি ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির আম গাছের ডাল বসানো হয়। এর মধ্যে আটটি প্রজাটির কলম বেঁচে যায়। পরবর্তীতে বিশেষ যত্নে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফলন দেওয়া শুরু করে গাছটি।

Maggo

বর্তমানে গাছটিতে মিয়াজাকি, পালমার্ক, থাই জাম্বু, কাটিমন, বারি আম-১১, কিউজাই, হিমসাগর ও বানানা জাতের মোট আট প্রজাতির আম ধরেছে। এছাড়াও এই গাছ থেকে ১২মাস আম পাওয়া যাবে। বর্তমানে হর্টিকালচার সেন্টারে এ ধরনের নতুন গাছ তৈরির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। একসময় সারাদেশে এ ধরনের আম গাছের বিস্তার করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন এখানকার উদ্যানতত্ত্ববিদরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় দশ ফুট উচ্চতার গাছটিতে ঝুলে রয়েছে নানা আকার ও বর্ণের আম। লাল, সবুজ ও খয়েরি রঙের এসব বাহারি আমগুলো দেখতে গোল, চ্যাপ্টা ও কলার মতো লম্বাকৃতির। গাছটির কয়েকটি ডালে আম পরিপক্ব হয়ে উঠেছে। আবার কিছু ডালে মাত্র আমের মুকুল এসেছে। এখানে ঘুরতে আসা অনেককে কৌতূহলী হয়ে আম গাছের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে।

manggo

ঝিকরহাটি থেকে এখানে ঘুরতে এসেছেন ইব্রাহীম শেখ নামের এক যুবক। এমন অদ্ভুত আম গাছ দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তিনি। পাশাপাশি নিজের বাড়িতেও এ ধরণের আমগাছ লাগানোর ইচ্ছে পোষণ করেন তিনি। ইব্রাহীম বলেন, একটি গাছে আট ধরনের আম ধরে আমি এর আগে কখনও দেখিনি। এই প্রথম এমন অদ্ভুত গাছ দেখলাম। গাছটিতে ধরা বিভিন্নরকমের আমগুলো দেখে আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। আমি এখানকার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এই ধরনের একটি আম গাছ বাসায় লাগাতে চাই।

Manggo

হর্টিকালচার সেন্টারে এসেছেন আলী শিকদার নামের আরেক যুবক৷ তিনি বলেন, এটি একটি সুন্দর সৃজনশীলতা। আমরা আটটি গাছ না লাগিয়ে যদি এমন একটি গাছ লাগাতে পারি তাহলে আমাদের গাছ লাগাতে জায়গার কম পড়বে। এছাড়া ও আমরা একই গাছ থেকে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের আম সারাবছর খেতে পারব।

হর্টিকালচার সেন্টারের আম গাছটি দেখে কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার বলেন, আমি এই প্রথম বার মাদারীপুর হর্টিকালচার সেন্টার আসলাম। এখানে এসে একটি ব্যতিক্রমী আম গাছ দেখতে পেলাম। যেখানে একই গাছে আট ধরনের আম পাওয়া যায়। বিষয়টি সত্যিই বিস্ময়কর। আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।

Manggo

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদারীপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আশুতোষ কুমার বিশ্বাস বলেন, এটি একটি অভিনব কলম পদ্ধতি। এ পদ্ধতি অনুসরণ করে বীজের চারা থেকে কলম করার মাধ্যমে এ ধরনের গাছ তৈরি করা হয়েছে। একই গাছে বিভিন্ন প্রজাতির আমের সংমিশ্রণ তৈরি করায় বছরের লম্বা সময় ধরে এই গাছটি থেকে আম পাওয়া যাবে। এই গাছটি ইতোমধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনেকেই গাছটি নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। আমরা সবার চাহিদানুযায়ী আরও গাছ তৈরি করার পরিকল্পনা করছি।

জাগ্রত জয়পুরহাট

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ