শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ১৭ আগস্ট ২০২১

আজ শবনমের জন্মদিন

আজ শবনমের জন্মদিন

১৯৬০ দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম। তিনি বাংলাদেশের সিনেমা ছাড়াও পাকিস্তানের সিনেমাতে অভিনয় করেছেন। এ দেশের সিনেমায় কালজয়ী অভিনেত্রীদের একজন তিনি। আজ কিংবদন্তি এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। এবারে তিনি ৮২ বছরে পা রাখলেন।

ঝর্ণা বসাক চলচ্চিত্রে যাকে শবনম নামেই চেনে সবাই।  ১৯৪০ সালের ১৭ আগস্ট তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ননী বসাক ছিলেন একজন স্কাউট প্রশিক্ষক ও ফুটবল রেফারি। ১৯৬৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর স্বনামধন্য সংগীত পরিচালক রবিন ঘোষকে বিয়ে করেন শবনম। তাদের সংসারে একমাত্র ছেলে রনি ঘোষ।

বাংলাদেশি চলচ্চিত্র দিয়ে অভিষেক ঘটলেও স্বাধীনতা-উত্তর সময়টাতে উর্দু চলচ্চিত্রে পাকিস্তানের হয়ে তিনি অর্জন করেছিলেন আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা। শুধু তাই নয় পাকিস্তানের সিনেমায় সম্ভাব্য সব পুরস্কার ও স্বীকৃতিও তিনি অর্জন করেছেন।

স্বাধীনতার পর তিনি নিয়মিত হন বাংলাদেশে। এখানেও বাজিমাত করেছেন সুপারহিট সব ছবিতে অভিনয় করে। তবে দীর্ঘ বিরতির পর ১৯৯৯ সালে কাজী হায়াত-মান্না জুটির ‘আম্মাজান’ ছবি দিয়ে নতুনভাবে প্রত্যাবর্তন হয় তার। সে ছবির পর থেকে সবার হৃদয়ে ‘আম্মাজান’ হিসেবে স্থান করে নেন তিনি।

১৯৬১ সালে বাংলা চলচ্চিত্র ‘হারানো দিন’র মাধ্যমে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন শবনম। ১৯৬২ সালে উর্দু চলচ্চিত্র ‘চান্দা’ ছবির মাধ্যমে তৎকালীন সমগ্র পাকিস্তানে রাতারাতি তারকাখ্যাতি পান। এ দুটি ছবিই তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) ঢাকা থেকে মুক্তি পেয়েছিল।

পরবর্তী বছরে ‘তালাশ’ সমগ্র পাকিস্তানে মুক্তি পেলে ওই সময়ের সর্বাপেক্ষা ব্যবসা সফল ছবির মর্যাদা লাভ করে। ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে শবনম পাকিস্তানের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় অভিনেত্রী হিসেবে চিহ্নিত হন। পেশাজীবী মনোভাবের কারণে তিনি ১৯৬৮ সালে পাকিস্তানের করাচিতে স্থায়ীভাবে বাস করতে থাকেন।

সত্তর দশকের শুরুর দিকে শবনম ললিউডে (লাহোর) পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়িকা হিসেবে নিজের স্থান পাকাপোক্ত করেন। তিনি নায়িকা হিসেবে পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে ধ্বস নামার পূর্বে আশির দশকের শেষ পর্যন্ত প্রবল প্রতাপে একচ্ছত্র প্রাধান্য বিস্তার করেছিলেন।

ইতিহাস বলে ষাট দশক থেকে আশির দশক পর্যন্ত তিনটি দশক ধারাবাহিক ও সফলভাবে রোমান্টিক চরিত্রে অভিনয় করে অগণিত দর্শক-শ্রোতার মন জয় করেছিলেন।

শবনম ‘আয়না’ ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন এবং ছবিটি পাকিস্তানের সিনেমা হলগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে চলার রেকর্ড করে। ষাটের দশকে কাজী রিজভানী’র পরিচালনায় ওয়াহিদ মুরাদের বিপরীতে ‘লাদলা’ ছবির ‘সোচা থা পিয়ার না করেঙ্গে’ গানটি অত্যন্ত জনপ্রিয়তা পায় এবং সেই সঙ্গে তিনিও সবার কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হন।

১৯৮৮ সালে শবনম তার চরিত্র পরিবর্তন করেন এবং পুনরায় ঢাকা ও লাহোরের চলচ্চিত্রাঙ্গনে অভিনয় করতে থাকেন। ৪০ বৎসরের অধিককাল ধরে অভিনয়ের ফলে তিনি প্রায় ১৮০টি চলচ্চিত্রের অনেকগুলিতে অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন।

শবনম সেরা অভিনেত্রী হিসেবে পাকিস্তান চলচ্চিত্রের সম্মানসূচক নিগার পুরস্কার পেয়েছেন ১১ বার! সহ অভিনেত্রী হিসেবে পেয়েছেন ১ বার। আর তিনবার পাকিস্তানের জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন।

শবনম-ওয়াহিদ মুরাদ, শবনম-নাদিম জুটি বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে পাকিস্তানে। পরবর্তীকালে পাকিস্তানে বসবাস করে পাঞ্জাবী চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। আর ঢাকাতে তিনি জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন রহমান ও নায়করাজ রাজ্জাকের বিপরীতে।

শবনম ছিলেন তার সময়কার নারীদের কাছে স্টাইল আইকন। তিনি লাক্স সুন্দরী হিসেবে পাকিস্তানে লাক্সের শুভেচ্ছা দূতের দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন।

জাগ্রত জয়পুরহাট

সর্বশেষ

জনপ্রিয়