• সোমবার ০২ অক্টোবর ২০২৩ ||

  • আশ্বিন ১৬ ১৪৩০

  • || ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

জাগ্রত জয়পুরহাট

ফেনীতে সাড়া ফেলেছে সাইফুলের জৈব সার

জাগ্রত জয়পুরহাট

প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২  

চাকুরির আশায়না ঘুরে যুবক সাইফুল ইসলাম শাহেদ তার নিজ এলাকা প্রত্যন্ত গ্রামে গড়ে তুলেছেন একটি জৈব সার কারখানা, নাম দিয়েে ছন এম.আর.সি এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিডেট। ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের বাতশিরি গ্রামে ২০০৯ সালে  এ উদ্যোগ নেন যুবক সাইফুল। পরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি থেকে ২০১৬ সালে নিবন্ধন পান।

সাইফুল দাগনভূঞা উপজেলার একজন আদর্শ কৃষি উদ্যোক্তা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিসমূহ ব্যবহার ও সম্প্রসারণে কাজ করে আসছেন। সাইফুল জানান, ২০২১ সালে গোবর, মুরগির বিষ্ঠা/লিটার, ব্যবহৃত চা-পাতা ও ট্রাইকোডার্মা ব্যবহারের মাধ্যমে জৈব সার উৎপাদান করেন প্রায় ২১০ টন। প্রতি কেজি জৈব সার পাইকারিতে ১০ টাকা করে বিক্রি করেছেন। ২০২১ সালে মোট ২১ লাখ টাকার জৈব সার বিক্রি করেছেন। এছাড়া  ও তিনি তার উৎপাদিত জৈব সার ব্যবহারের মাধ্যমে প্রায়৫০ শতাংশ জমিতে সবজি বাগান (টমেটো, লাউ, কুমড়া, বেগুন ও লেটুস) এবং প্রায় ৫০ শতাংশ জমিতে ফল বাগান (লেবু, আম) চাষ করেছেন।

সাইফুল জানান, বছরে সবজি ও ফল বাগান হতে আয় করেন প্রায় ৮০ হাজার টাকা। ট্রাইকোডার্মা মিশ্রিত কম্পোস্ট থেকে নিয়মিত জৈব সার উৎপাদন ও সরবরাহ করছেন। এ সার এখন ফেনী, নোয়াখালী, পার্বত্য চট্টগ্রাম, শেরপুর, জামালপুর, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে, রয়েছে ভালো চাহিদা। উদ্যোক্তা সাইফুল বলেন, জৈব সার প্রতি শতকে সবজির জন্যে ৫ কেজি, পেঁয়াজ আলু, ধান, গম, পাটসহ অন্যান্য ফসলের জন্য ৩ থেকে ৪ কেজি, মাছে বিঘা প্রতি ৪০ থেকে ৬০ কেজি, ফল গাছে ৫ থেকে ৭ কেজি করে ব্যবহার করলেই ভালো সুফল পাওয়া যায়। ২০০৯ সাল থেকে এর উৎপাদন ও ব্যবহার শুরু করি। ১৬০ শতক জায়গার মধ্যে আমার জৈব সার (এমআরসি) উৎপাদন খামার রয়েছে।

উল্লেখ্য, উদ্যোক্তা হিসেবে সাইফুল 'বঙ্গবন্ধু জাতীয়কৃষি পুরস্কার' এর জন্য উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে মনোনীত হয়েছন।
দাগনভূঞা উপজেলা কৃষি অফিস ও স্থানীয় কৃষকরা জানান, জৈব সারের রযেছে নানা উপকারিতা। এর ব্যবহার আবাদে ফলন বৃদ্ধি ও গুণগত মান বাড়ায়। সব ঋতুতে সকল ফসলে ব্যবহার করা যায় জৈব সার বীজের অংকুরোদগমে সহায়তা করে, মাটির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, মাটির গঠন ও প্রকৃত গুণ রক্ষা করে, মাটির উপকারি জীবানুগুলোর বংশবৃদ্ধি ও কার্যকারিতা বাড়ায় মাটিতে রস মজুদ রাখতে সহায়তা করে, ফলে অধিক সেচের প্রয়োজন হয়না। এ সার মাটিতে দেয়ার পর ৬ থেকে ১৮ মাস পর্যন্ত প্রভাব থাকে যা পরবর্তী ফসলের জন্যেও কাজে লাগে।

দাগনভূঞা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ মহিউদ্দিন মজুমদার জৈব সারের উৎপাদন ব্যবহার ও উদ্যোক্তা প্রসঙ্গে জানান, উদ্যোক্তা সাইফুলকে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। তার মাধ্যমে এলাকায় নতুন কৃষি উদ্যোক্তা সৃষ্টি হচ্ছে এবং তরুণ শিক্ষিত বেকার যুবকরা কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য এগিয়ে আসছে। ফলে অত্র এলাকার কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণে নতুন মাত্রা যোগ হচ্ছে।

উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা লুৎফুল হায়দার ভূঁইয়া বলেন, এম.আর.সি জৈব সারে ট্রাইকোডার্মা মিশ্রণ করার ফলে এর গুণগত মান বৃদ্ধি হওয়ায় কৃষকরা এ সার ব্যবহার করলে ফসলের ছত্রাকজনিত সমস্যা অনেকাংশে সমাধান করার সুযোগ আছে।

জাগ্রত জয়পুরহাট
জাগ্রত জয়পুরহাট