মুরগি পালনে মাসে ৩ লাখ টাকা আয় করেন প্রবাসফেরত মনিরুজ্জামান!

স্বল্প পুঁজিতে মুরগির খামার দিয়ে জীবনে সুদিন ফিরিয়েছেন। বেকারত্ব দূর করে আর্থিকভাবে নিজেকে স্বচ্ছল করেছেন। বলছি মুরগির খামার করে নিজেকে সফল করে গড়ে তোলা দিনাজপুরের মনিরুজ্জামানের কথা। বর্তমানে মুরগি পালন করে তিনি মাসে ২-৩ লাখ টাকা আয় করছেন।
জানা যায়, মনিরুজ্জামান দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলার ভিয়াইল গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জীবিকার তাগিদে ২০০৫ সালে আবুধাবিতে পাড়ি জমান। সেখানে দীর্ঘদিন কাজ করার পর জীবনের কোনো উন্নতি না দেখে ২০০৯ সালে দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে আর্থিক সংকটে পড়েন। তারপর অনলাইনের মাধ্যমে উন্নত জাতের মুরগির চাষ দেখে আগ্রহী হন। তারপর নরসিংদী উন্নত জাতের সোনালী মুরগির ডিম সংগ্রহ করে বাচ্চা ফুটিয়ে খামার শুরু করেন। বর্তমানে তার খামারে ৪টি সেডে ১৫-১৬ হাজার মুরগি রয়েছে। আর সকল খরচ বাদ দিয়ে মাসে ২-৩ লাখ টাকা আয় করেন তিনি।
খামারি মনিরুজ্জামান বলেন, আমি মাদ্রাসায় পড়াশোনা শেষ করে অর্থ উপার্জনের জন্য ২০০৫ সালে প্রবাসে চলে যাই। সেখানে দীর্ঘদিন থাকার পর কোনো উন্নতি না হওয়াতে দেশে এসে কিছু করবো এই চিন্তা করে ২০০৯ সালে বাড়ি ফিরে আসি। বাড়ি এসে অনলাইনের মাধ্যমে উন্নত জাতের মুরগির পালন দেখি। তারপর মুরগির পালনে আগ্রহী হই।
তিনি আরো বলেন, দেশে ফিরে হতাশায় না ভুগে নরসিংদী থেকে ২০টি সোনালি উন্নতমানের মুরগির ডিম সংগ্রহ করি এবং ঢাকা মিরপুর থেকে ২০০ পিস মুরগি কিনে এনে প্রবাস বন্ধু পোল্ট্রি অ্যান্ড চিকস নামের খামার শুরু করি। বর্তমানে আমার খামারের ৪টি শেডে প্রায় ১৫-১৬ হাজার মুরগি রয়েছে। শীতকালে খামারে মুরগি কম থাকে। ৭ হাজার ৫০০ প্যারেন্টস আছে, আর রানিং ডিম আছে ২ হাজার। প্রতিদিন প্রায় ৭০ শতাংশ ডিম সংগ্রহ করি। সেই ডিম থেকে প্রতি মাসে প্রায় ২৮-৩০ হাজার বাচ্চা উৎপাদন হয়। বাচ্চাগুলো স্থানীয় খামারিদের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলার খামারিদের কাছে সরবরাহ করা হয়। একেকটি বাচ্চা ৪০-৫৫ টাকায় বিক্রি হয়।
মনিরুজ্জামান আরো বলেন, প্রবাসে থাকা অবস্থায় ১০-১৫ হাজার টাকা আয় করতে পারতাম। বর্তমানে দেশে খামার করে ১৬ জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। তাদের বেতন ভাতা আরও আনুষাঙ্গিক খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে ২-৩ লাখ টাকা আয় হয় আমার।
চিরিরবন্দর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সারফারাজ হোসাইন বলেন, মনিরুজ্জামন একজন সফল খামারি। তার এই উদ্যোগের কারণে অনেকেই মুরগির খামার করতে আগ্রহী হয়েছেন। প্রাণী সম্পদ থেকে তাকে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন থেকে শুরু করে সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়।
জাগ্রত জয়পুরহাট