• বৃহস্পতিবার ০১ জুন ২০২৩ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ১৭ ১৪৩০

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৪

জাগ্রত জয়পুরহাট

আঙিনার আম বাগানে ইসাহাকের বাজিমাত

জাগ্রত জয়পুরহাট

প্রকাশিত: ২৩ মে ২০২৩  

বাড়ির আঙিনায় আম চাষ করে রীতিমতো বাজিমাত করেছেন পটুয়াখালীর কুয়াকাটার ইসাহাক মুন্সি নামের এক কৃষক। একটি গাছের আম বিক্রি করেছেন প্রায় দুই লাখ টাকায়। শখের বশে আম বাগান তৈরি করে এখন পুরো এলাকার বিশাল একটি অংশের আমের চাহিদা মেটায় তার এই আমবাগান। এমনকি পুরো উপজেলাজুড়ে ‘কুয়াকাটার আম’ নামে খ্যাতি পেয়েছে ইসাহাকের আম।

স্বাদে সুমিষ্ট, কীটনাশকমুক্ত এবং দেশীয় প্রজাতির হওয়ায় ১৮০-২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় এই গাছটির আম। একটি গাছ থেকে উৎপাদন করেছেন এমন প্রায় ৪০ মণ আম। এই গাছটি ছাড়াও তার বাড়ির আশপাশে ৩-৪ একর জায়গাজুড়ে ১৮০-২০০টি আমগাছ রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ফজলি, ল্যাংড়া, আশ্বিনা, হিমসাগর, লকনা, কিউজাই, ব্যানানা ম্যাঙ্গোসহ নানা প্রজাজির আম।

এসব আম ৪০-২০০ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি করা হয় এমনকি এলাকার যে কেউ চাইলে এখান থেকে চাহিদামতো আম নিতে পারেন।

জানা যায়, ৮ বছর আগে রাজশাহী থেকে মাত্র ৫০টি আমের চারা নিয়ে এসে শখ করে বাড়ির আঙিনায় চাষ শুরু করেন তিনি। পরে ভালো ফলন দেখে পরিধি বাড়িয়ে এই বাগান তৈরি করেন। এর পর থেকে প্রতিবছর আমের উৎপাদন বাড়তে থাকে। সঙ্গে পুরো এলাকাজুড়ে চাহিদা বাড়তে থাকে তার আমের। সবমিলিয়ে তিনি প্রতিবছর ৫-৬ লাখ টাকার আম বিক্রির স্বপ্ন বুনছেন এখন।

রুহুল আমিন নামের এক প্রতিবেশী বলেন, আমাদের এখন আর উত্তরাঞ্চলের আমের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। কারণ এই এলাকায় এখন পর্যাপ্ত আমের উৎপাদন হয়। আমাদের যতটুকু প্রয়োজন এসব বাগান থেকেই কিনে নিই।

jagonews24

কুয়াকাটা এলাকার আলাউদ্দিন নামের চাষি জানান, কুয়াকাটার আম বলতে ইসাহাক মুন্সির আমকেই চিনে থাকি আমরা। একটি গাছ থেকে প্রায় ৩৫-৩৮ মণ আম বিক্রি করেছেন তিনি। এটা এই এলাকার আর কেউ পারেনি।

ইসাহাক মুন্সি বলেন, আমার বাড়ির পুরোনো একটি গাছ যেটা থেকে আমি এরইমধ্যে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার বেশি আম বিক্রি করেছি। আরও যে আম আছে তা নিয়ে মোট দুই লাখ টাকার মতো বিক্রি হবে। এটা পুরোনো গাছ হলেও আমি আমার বাড়ির আশপাশে প্রায় ২০০টির মতো গাছে ১০-১২ প্রজাতির আমের চাষ করেছি।

তিনি আরও বলেন, আমার মতো আরও অনেক চাষি রয়েছেন কুয়াকাটাসহ আশেপাশের এলাকায়। তবে আমরা নিজেরা আম চাষ করে বেশ সফল হলেও কৃষি অফিস থেকে তেমন কোনো সহযোগিতা কিংবা পরামর্শ পাচ্ছি না। সরকার যদি আমাদের দিকে আর একটু নজর দেয় তাহলে আশা করি অত্র এলাকার আমাদের পুরো চাহিদা আমরা মেটাতে পারবো।

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ বলেন, একটি গাছ থেকে দুই লাখ টাকার আম বিক্রি এটা আসলেই সাফল্যের। তবে এই উপজেলায় এমন খুব কম গাছ রয়েছে। কলাপাড়ায় গত ৪-৫ বছর ধরে আম চাষে বেশ পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে এবছর প্রচুর আমের উৎপাদন হয়েছে। কলাপাড়ায় প্রায় ১১০ হেক্টর জমিতে ২০০টি ছোট-বড় আমের বাগান রয়েছে। এবছর উপজেলায় সর্বমোট ২৫০ মেট্রিক টনের বেশি আম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কোনো চাষি বাগান শুরু করার আগে তাকে পরামর্শ দেওয়াসহ পদ্ধতির দিকে আমরা নজর রাখি। তবে চারা কিংবা কীটনাশক দেওয়ার কোনো সুযোগ আমাদের তৈরি হয়নি। পরবর্তীতে বরাদ্দ দেওয়া হলে আমরা তখন বিতরণ করবো।

জাগ্রত জয়পুরহাট
জাগ্রত জয়পুরহাট