• সোমবার ০২ অক্টোবর ২০২৩ ||

  • আশ্বিন ১৬ ১৪৩০

  • || ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

জাগ্রত জয়পুরহাট

যশোরে কাজুবাদাম চাষ, রফতানিতে সম্ভাবনা

জাগ্রত জয়পুরহাট

প্রকাশিত: ২৯ মে ২০২৩  

যশোরের চৌগাছা উপজেলার পাতিবিলা গ্রাম। এখানে পেয়ারার সঙ্গে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল কাজুবাদামের ক্ষেত। দুই বছর আগে কৃষি বিভাগের সরবরাহ করা ৩০টি কাজুবাদাম গাছের চারা রোপণ করেন এ গ্রামের মাহাবুবুর রহমান লিটন। সেই গাছে এবার ফল এসেছে। পরীক্ষামূলক চাষে আশানুরূপ ফল পাওয়ায় খুশি চাষি ও কৃষি কর্মকর্তারা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সমতলে পরীক্ষামূলক চাষ সফল হওয়ায় কাজুবাদামের চাষ নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়েও রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা আছে।

বাগানে গিয়ে দেখা যায়, অসংখ্য কাজুবাদাম ঝুলছে গাছে। কোনোটির বাদাম এখনো কাঁচা, কোনোটি পেকে গেছে। পাকা রঙিন ফলের গা থেকে ভেসে আসে মিষ্টি ঘ্রাণ। ফলের ওপরের অংশ থেকে বাদাম পাওয়া যায়, নিচের অংশ থেকে জুস, ভিনেগার ও মসলা তৈরি করা হয়।

বাংলাদেশের মাটিতে চীনাবাদাম উৎপন্ন হলেও কাজুবাদামের চাষ খুব একটা দেখা যায় না। তবে বর্তমানে রাঙামাটি, কুমিল্লাসহ বেশ কিছু পাহাড়ি এলাকায় এর চাষ হচ্ছে। পাহাড়ি ফল হিসেবে কাজুবাদাম বেশি পরিচিত। দ্রুত বর্ধনশীল, পরিবেশবান্ধব ও লাভজনক হওয়ায় কাজুবাদাম চাষ সমতলে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি বিভাগ। 

জানা যায়, কাজুবাদাম একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ফল। একে বলা হয় প্রাকৃতিক পুষ্টিকর ফল। এর ২টি অংশ খাওয়ার উপযোগী। কাজু আপেল অত্যন্ত রসালো এবং বাদাম পুষ্টিকর খাবার। পাকা কাজু আপেল সাধারণ আপেলের মতো খাওয়া যায়। কিন্তু বাদাম কাঁচা অবস্থায় খাওয়ার উপযোগী নয়। প্রক্রিয়াজাত করার পর বাদাম খাওয়া হয়। বীজ থেকে পাওয়া বাদাম সুস্বাদু, মুখরোচক ও পুষ্টিকর এবং অর্থনৈতিক দিক দিয়েও মূল্যবান। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কাজুবাদাম ও কফি উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় চাষি মাহাবুবুর রহমান লিটন দুই বিঘা জমির পেয়ারা ক্ষেতে সাথী সফল হিসেবে কাজুবাদাম চাষ করেছেন। দুই বছর আগে কৃষি বিভাগের সরবরাহ করা ৩০টি কাজুবাদাম গাছের চারা রোপণ করেন। সেই গাছে এবার ফল এসেছে। পরীক্ষামূলক চাষে আশানুরূপ ফল পাওয়ায় খুশি চাষি ও কৃষি কর্মকর্তারা।

পাতিবিলা গ্রামের কৃষক মাহাবুবুর রহমান লিটন বলেন, আমি পেয়ারা ও ড্রাগন ফলের চাষ করি। দুই বছর আগে কৃষি অফিস আমাকে কাজুবাদাম চাষের প্রশিক্ষণ দেয়। এরপর ৩০টি কাজুবাদামের চারা দেয়। সেই চারা দুই বিঘার পেয়ারা ক্ষেতের আইলের (সীমানা) দিয়ে রোপণ করি। গাছগুলো দ্রুত বাড়ছে। এ বছর গাছে কাজুবাদাম ফল এসেছে। গাছ যত বড় হবে, ফলন তত বাড়বে। পাহাড়ের ফল আমাদের জমিতে ভালো ফলন দিয়েছে। এতে আমি খুবই খুশি। আমি দুই বিঘা জমিতেই কাজুবাদাম চাষ করতে চাই। এজন্য কৃষি বিভাগের সহযোগিতা চেয়েছি।

এ বিষয়ে চৌগাছা উপজেলা কৃষি অফিসার মুশাব্বির হোসাইন বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কাজুবাদাম ও কফি উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় সমতলে কাজুবাদাম চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় যশোরের চৌগাছা ও ঝিকরগাছা উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে কাজুবাদাম চাষ করা হয়েছে। পরীক্ষামূলক চাষে সফল হয়েছেন চৌগাছার পাতিবিলার কৃষক মাহাবুবুর রহমান লিটন। কাজুবাদাম সাথী ফসল হিসেবে চাষ করায় খরচ কম। আগ্রহী কৃষকদের কাজুবাদাম চাষে সহযোগিতা করা হবে।

তিনি বলেন, দেশে ও বিদেশে কাজুবাদামের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এটি উচ্চমূল্যের ফসল। কাজুবাদাম চাষের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে চাই। কাজুবাদাম চাষ সম্প্রসারণ করে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়েও রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা আছে।

জাগ্রত জয়পুরহাট
জাগ্রত জয়পুরহাট