শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ১৩ ডিসেম্বর ২০২১

ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ

ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ

প্রতিবছর গোটা বিশ্বে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয় ক্যান্সারের কারণে। বর্তমানে এই সংখ্যাটা দিনদিন ক্রমশ বেড়েই চলেছে। শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ফুসফুস, যেখানে ক্যান্সার সহজেই বাসা বাঁধতে পারে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা এটিকে ‘নীরব ঘাতক’ বলে থাকেন। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে একেবারে শেষ পর্যায়ে। ওই সময় রোগীকে বাঁচানো প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে।

ফুসফুসে ক্যান্সারের প্রাথমিক চিকিৎসা মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে, যদি তা প্রথমে সনাক্ত করা যায়। যদিও তা সহজ নয়। ফুসফুসের ক্যান্সারের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না যতক্ষণ না সেগুলো একটি বড় অংশে ছড়িয়ে পড়ে।

ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণগুলো বেশিরভাগ সময়েই অন্যান্য লক্ষণের সঙ্গে মিলে যাওয়ার কারণে বুঝতে পারা সহজ হয় না। এতে চিহ্নিত করতে দেরি হয়, ফলে চিকিৎসা পেতেও দেরি হয়। তবে কাশির ধরন দেখে ফুসফুসের ক্যান্সারে প্রাথমিক লক্ষণ শনাক্ত করা যেতে পারে। আপনি যদি ধূমপায়ী হন বা মনে করেন যে আপনি ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকিতে আছেন, তাহলে লক্ষণগুলোকে হালকাভাবে নেবেন না।

কাশি কি নির্দেশ করতে পারে?

কাশি আমাদের শ্বাসতন্ত্র সম্পর্কে অনেক কিছু প্রকাশ করতে পারে। যখনই আপনার শ্বাসনালীতে জীবাণু এবং ক্ষতিকারক বস্তু আটকা পড়ে, তখন কাশিই হলো আপনার শরীরের প্রথম প্রতিক্রিয়া। এমনকী ফুসফুসের ক্যান্সারের ক্ষেত্রেও, কাশি হতে পারে প্রাথমিক এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। ছোটখাটো সমস্যার কারণে কাশি হলে, কয়েকদিন পর তা নিজে থেকেই চলে যায়। যেটি দীর্ঘ সময় ধরে থাকে তা গুরুতর কিছু নির্দেশ করে। যখন কাশি কয়েক সপ্তাহ বা মাস ধরে থাকে তখন এটি ফুসফুসের ক্যান্সারের কারণে হতে পারে।

কাশিসহ অন্যান্য লক্ষণ

ফুসফুসের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে কাশির সঙ্গে অন্যান্য উপসর্গ যেমন রক্তাক্ত বা মরিচা-বর্ণের শ্লেষ্মা বা কফ, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা এবং ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়ার মতো সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। যা বারবার হতে পারে বা চলে যায় না।

আপনি যদি বেশিরভাগ সময় কাশির সমস্যা মোকাবেলা করেন বা কাশিতে কোনো পরিবর্তন হয়, তবে এটি আপনার ফুসফুসে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিকে নির্দেশ করতে পারে। ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগলে আপনার কাশি অন্যরকম শোনাতে শুরু করতে পারে, কাশি দেওয়ার বা কথা বলার সময় আপনি ব্যথা অনুভব করতে পারেন।

লক্ষণগুলো কাশির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়

কাশি প্রকৃতপক্ষে ফুসফুসের ক্যান্সারের সবচেয়ে সুস্পষ্ট এবং প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি, তবে এই রোগের আরো কয়েকটি লক্ষণ রয়েছে। উপসর্গগুলো ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হতে পারে, তাই এই সমস্যার অন্যান্য লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফুসফুসের ক্যান্সারের আরো কিছু লক্ষণীয় লক্ষণ হলো-

* গলা বসে যাওয়া

* ক্ষুধামান্দ্য

* ব্যাখ্যাতীত ওজন হ্রাস

* ক্লান্তি

* মুখ বা ঘাড়ে ফোলা

বিরল ক্ষেত্রে ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তির আঙ্গুলে পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। আঙুল বাঁকা হয়ে যায় বা আঙুলের প্রান্ত বড় হয়ে যায়। কাঁধে ব্যথাও ফুসফুসের ক্যান্সারের একটি সাধারণ উপসর্গ।

কখন চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে

যদি আপনার কাশি ৪ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দীর্ঘায়িত হয় বা আপনি আপনার কাশির শব্দে পরিবর্তন লক্ষ্য করেন, তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। বিভিন্ন ছোট বা বড় কারণে কাশি হতে পারে। তাই এটাকে হালকাভাবে নেয়া উচিত নয়। সেইসঙ্গে ফুসফুসের ক্যান্সারের অন্যান্য লক্ষণগুলো খুঁজে বের করুন। ধূমপায়ীদের মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত ঝুঁকি বেশি।

জাগ্রত জয়পুরহাট

সর্বশেষ

জনপ্রিয়