শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ || ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১৩:৪৮, ১২ জানুয়ারি ২০২২

এই সময়ে জ্বর হলে করণীয়

এই সময়ে জ্বর হলে করণীয়

করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ এখন আর কড়া নাড়ছে না, ইতিমধ্যেই নতুন করে আছড়ে পড়েছে সারা বিশ্বে। করোনার সংক্রমণের হার বেড়েই চলেছে। এ সময় প্রায় প্রতি ঘরেই কেউ না কেউ জ্বরাক্রান্ত। কারো ভাইরাস জ্বর, কারো সিজনাল আবার কারো ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া, আবার কারো করোনা জ্বর।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যেকোনও প্রকার জ্বরই হোক না কেন, স্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয় উপাদান এই সময়ে খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখা প্রয়োজন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক খাবার রাখতে হবে প্রতিদিনের তালিকায়। বহু মানুষ জ্বরের সমস্যা ডিম, মাছ কিংবা মাংস খাওয়ার পরামর্শ দেন। এটা কি স্বাস্থ্যকর? নাকি ক্ষতিকর? করোনা পরিস্থিতিতে যেকোনও খাবার খাওয়ার আগে স্বাস্থ্যকর দিক এবং ক্ষতিকর দিন দুটোই জেনে রাখা জরুরি।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, জ্বর হলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ফের বাড়ানোর জন্য এবং শরীরের দুর্বলতা দূর করার জন্য এই সময়ে রোগীর পাতে পুষ্টিকর খাবার রাখা খুবই জরুরি। সঠিক পুষ্টিকর খাবার রোগীকে দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করে। তাই জ্বর হলে কী খাওয়াবে আর কী খাওয়াবেন না, সে সম্পর্কে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়।পুষ্টিবিদদের মতে, এই সময়ে জ্বরে আক্রান্ত রোগী ইনফেকশনের সঙ্গে লড়াই করে। তার সঙ্গে থাকে ওষুধ। অনেক সময়ই রোগী এই সময়ে ডিহাইড্রেশনে ভোগে। এছাড়াও আরও নানা সমস্যা দেখা দেয়। তাই সঠিক পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন থাকে।

 

জ্বর কমাতে বা নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছু খাবার দারুণ কার্যকর। তরল খাবার জ্বরের সময় শরীর দ্রুত পানিশূন্য হয়ে পড়ে বলে তরল খাবার হজমে সহায়তা করতে, তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে, পানিশূন্যতা রোধ ইত্যাদিতে ভালো কাজ করে।তাই এ সময় অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি পানি পান করা উচিত। পানি ছাড়া তরল খাবার হিসেবে যা যা খেতে পারেন তা হলো— ফলের রস বিশেষ করে ভিটামিন ‘সি’ যুক্ত লেবু, আনারস, কমলা, মালটার মতো টকজাতীয় ফলের রস বেশ উপকারী।

দিনে দুই থেকে তিনবার এসব ফলের রস পান করা সম্ভব হলে তা তাৎক্ষণিক শক্তি জোগানোসহ জ্বরের সংক্রমণের বিরুদ্ধে সাহায্য করে।জ্বর হলে শরীরের বিপাকক্রিয়া বাড়ে, প্রয়োজন হয় বাড়তি ক্যালরির। এ সময় তাই প্রোটিনের ভূমিকা অনেক। কিন্তু মাছ-মাংসের মতো প্রোটিন তখন চিবিয়ে খেতে চান না অনেকে। পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দ্রুত আরোগ্য লাভে চিকেন স্যুপ বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে ভাইরাল ফ্লুর বিরুদ্ধে। এর সঙ্গে সবজি মেশালে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়।

সর্দি-কাশিজনিত জ্বরে লাল চা বেশ উপকারী। সবচেয়ে ভালো হয় আদা, লং, এলাচ পানির সঙ্গে ফুটিয়ে অর্ধেক করে এর সঙ্গে লেবু ও মধু মিশিয়ে খেলে। এ ছাড়া পান করা যেতে পারে তুলসী চা। খেতে পারেন গ্রিন টিও।জ্বরের সময় প্রচুর দৈনন্দিন খাবার একটু নরম বা অর্ধতরল করে খাওয়াতে পারলে ভালো। এসব খাবার বেশি চিবোতে হয় না বলে সহজে গেলা যায়। হজমও হয় সহজে। নরম ও পাতলা মুগডালের খিচুড়ি, জাউভাত, সুজি, সাগু, পুডিং, নরম ও কাঁটা ছাড়া মাছ ইত্যাদি রোগীকে দেওয়া যেতে পারে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, যেকোনও রকমের পুষ্টিকর খাবার জ্বরে আক্রান্ত রোগীর শরীরে প্রোটিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে। সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ডিম, মাছ, মুরগির মাংস, এই সমস্ত কিছুতেই প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড. ভিটামিন বি-সিক্স, বি১২, জিঙ্ক এবং সেলেনিয়াম। এই সমস্ত কিছুই হাড় মজবুত করার সঙ্গে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তার সঙ্গে শরীরের দুর্বলতা দূর করে। প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় তাই এই সমস্ত পুষ্টিকর খাবার রাখা খুবই জরুরি।

জাগ্রত জয়পুরহাট

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ