দম্পতির জন্মনিরোধক ব্যবস্থা বেছে নেয়ার দিন আজ

আজ ২৬ সেপ্টেম্বর, জন্মনিরোধ দিবস। অন্যান্য বছরের মতো এবারও সারা দেশে পালন করা হচ্ছে দিবসটি। প্রতিটি মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ২০০৭ সাল থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর এটি পালন করা হয়।
সব দিবসেরই একটি প্রতিপাদ্য থাকে। জন্মনিরোধ দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘বিকল্পের ক্ষমতা’। এখানে দম্পতির জন্মনিরোধক ব্যবস্থা বেছে নেয়ার সুযোগের কথা বলা হয়েছে। এতে পছন্দের গুরুত্ব এবং স্বাধীনতার ভিত্তিতে প্রজননস্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের তথ্য মতে, জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য বর্তমানে দেশে পিল বা খাবার বড়ি, কপারটি, ইনজেকশন, লাইগেশন, চামড়ার নিচে বসিয়ে দেয়া ক্যাপসুল (ইমপ্ল্যান্ট), কনডম ও ভ্যাসেকটমি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে কনডম ও ভ্যাসেকটমি ছাড়া বাকি সব পদ্ধতি নারীদের জন্য। এসব পদ্ধতির মধ্যে খাবার বড়ির ব্যবহার সবচেয়ে বেশি।
বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ (বিডিএইচএস) ২০১৭-১৮ অনুসারে, ১৮ বছরের আগেই দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। ২০১৪ সালেও এমনটাই দেখা গিয়েছিল। বাল্যবিবাহের প্রবণতা বুঝতে ২০ থেকে ২৪ বছরের বিবাহিত নারীদের বিয়ের বয়স দেখা হয়েছে। তবে বিডিএইচএসের হিসাবে ২০০৭ আর ২০১১ সালেও বাল্যবিবাহের হার ৬৫ শতাংশ বা তার বেশি ছিল। ২০১৪ সালে তা ৫৯ শতাংশে নেমে এসেছে বটে, কিন্তু সেখানেই থমকে আছে।
১৪ই এপ্রিল ২০২১-এ প্রকাশিত ইউএনএফপিএ’র ‘আমার শরীর, কিন্তু আমার পছন্দ নয়’ শীর্ষক প্রতিবেদন বলছে, ৫৭টি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের অর্ধেকের বেশি নারী যৌনমিলন, জন্মনিয়ন্ত্রণ এমনকি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিজের মতামত প্রকাশ করতে পারে না। এরই ধারাবাহিকতায় কোভিড-১৯ বাস্তবতায় সারা বিশ্বে নারীর প্রতি সহিংসতা, স্বাস্থ্য সেবায় বিঘ্ন, অপরিকল্পিত গর্ভধারণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে।
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রচারের অভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণের আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারে দম্পতিদের সচেতন করা যাচ্ছে না। ভবিষ্যতের জনবিস্ফোরণ ঠেকাতে এখন থেকেই সচেতনতামূলক প্রচার বাড়ানো উচিত বলে মনে করছেন তারা। জন্মনিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ, গর্ভপাত, মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু ও যৌনবাহিত রোগসহ অনেক জটিলতা বাড়ার আশঙ্কা থাকে।
জাগ্রত জয়পুরহাট