শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ১১:৩৬, ১৫ অক্টোবর ২০২১

জয়পুরহাটে আগাম আমন ধানে কৃষকের মুখে হাসি

জয়পুরহাটে আগাম আমন ধানে কৃষকের মুখে হাসি

আমন ধানের গন্ধে ভরে উঠছে গ্রামগঞ্জ। মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে ধান কাটার উৎসব। সোনালি ধানে ভরে গেছে মাঠ। কেউ কাটছেন, কেউ আঁটি বাঁধছেন। কেউ কেউ ভাড়া করা ধান নিয়ে যাচ্ছেন বাড়ির উঠোনে। এরপর হবে কৃষকের আঙিনায় ধানের ছড়াছড়ি, গোলাভরা ধান এবং ধান থেকে চাল। তারপর নানা রকম পিঠাপুলি বানানো আর খাওয়ার ধুম। দম ফেলার ফুরসত নেই কারও। মহা ব্যস্ততায় দিন কাটছে কৃষকদের।

ধান কাটা শুরু হওয়ায় এই চিত্র দেখা গেছে জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায়। খাদ্যে উদ্বৃত্ত জয়পুরহাট জেলায় উৎপাদিত প্রধান ফসলগুলোর মধ্যে ধান অন্যতম। সেই আমন ধানের সবুজ-সোনালি শীষেই এখন কৃষকের স্বপ্ন দুলছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলা সদরসহ কালাই, ক্ষেতলাল, আক্কেলপুর ও পাঁচবিবি উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন আমন ধান গাছের পাতা ও শীষের প্রাচুর্যে সবুজের সমারোহ। ঘন সবুজের মাঝে মাঝে সোনালি খেত দেখা যাচ্ছে। সেগুলো আগাম জাতের আমন ধান। আগাম জাতের এ ধানগুলোর নাম, বিনা-৭ এবং বিনা-১৭। এ জাতের ধানগুলোর কাটা মাড়াইয়ের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

কৃষক জাহিদুল ইসলাম জানান, তিনি এবার সাড়ে তিন বিঘা জমিতে বিনা ধান-১৭ আবাদ করেছেন। এগুলো আগাম জাতের ধান। আর বাকি সাড়ে তিন বিঘা জমিতে মামুন জাতের ধান চাষ করেছেন। আগাম জাতের বিনা ধান-১৭ ইতোমধ্যে কাটা-মাড়াই কাজ শেষ পর্যায়ে। আর অল্প দিনের মধ্যেই ওই জমিতে আগাম জাতের মিউজিক আলু চাষ করবেন তিনি। আগাম জাতের এ ধান তিনি প্রতিবিঘা দুই হাজার টাকা দরে, চুক্তিতে শ্রমিকদের মাধ্যমে কেটে নিচ্ছেন।

কৃষক মফিজুল ইসলাম বলেন, আর অল্প ২০-২৫ দিনের মধ্যেই তার ধান কাটা শুরু হবে। ধান বিক্রি করে তিনি মেয়ে জামাই ডাকবেন। আর নতুন ধানের নতুন চাল দিয়ে তৈরি করা পিঠা, পায়েস, পুলিশসহ বিভিন্ন ধরনের উপাদেয় খাদ্য তিনি তাদের খাওয়াবেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জয়পুরহাটে ৬৯ হাজার ৬৬০ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা হয়েছে ৬৯ হাজার ৬৬২ হাজার হেক্টর জমিতে। চলতি রোপা আমন ধান মৌসুমে বিভিন্ন জাতের মধ্যে উফশী জাতের ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা হয়েছে ৬১ হাজার ৮১২ হেক্টর জমিতে। হাইব্রিড জাতের ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল পাঁচ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে কিন্তু অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা হয়েছে সাত হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে।

আর স্থানীয় জাতের ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭০০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা হয়েছে ৬০০ হেক্টর জমিতে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক বাবুল কুমার সূত্রধর জানান, চলতি রোপা আমন মৌসুমে আবহাওয়া ছিল অত্যন্ত রৌদ্রোজ্জ্ব¡ল। ধান খেতের রোগবালাই ছিল নগণ্য। যে অল্প স্বল্প জমিতে কিছুটা রোগবালাইয়ের ছিল, তা অত্যন্ত কম।

কৃষি বিভাগের দিক-নির্দেশনা ও পরামর্শ নিয়ে কৃষকরা এবার জমি চাষাবাদ করেছেন। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে; আশা করা যাচ্ছে, চলতি মৌসুমে ধানের ভালো ফল অর্থাৎ ধানের ভালো ফলন হবে।

জাগ্রত জয়পুরহাট

সর্বশেষ

জনপ্রিয়