দেশ সেরার তালিকায় পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
চিকিৎসা সেবার মান উন্নয়ন ও সার্বিক বিষয় জড়িপে জয়পুরহাটের পাঁচবিবির মহিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এখন দেশ সেরার তালিকায় জায়গা পেয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের এ মাসের জড়িপে দেশে ৪৮২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মধ্যে সমান (৭৬.৬৪) নম্বর পেয়ে মহিপুরসহ ৭টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যৌথভাবে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। মহিপুর ৭টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সঙ্গে যৌথভাবে প্রথম হলেও, রাজশাহী বিভাগে এককভাবে প্রথম। ইতিপূর্বে এ কমপ্লেক্সটি ২৮৩’তম এবং সর্বশেষ ১৩৩’তম পর্যন্ত অবস্থান করেছিল।
৫০ শয্যার এ হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও অফিস কর্মচারীদের সার্বিক সহযোগিতায় উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সোলায়মান হোসেন মেহেদীর যোগদানের ৪ মাসে এমন অভুতপূর্ব অর্জনে সবাই খুশি। সফলতার তথ্য অনুসন্ধ্যানে হাসপাতালের রেজিষ্টারে দেখা যায়, বিভিন্ন কারনে ও চিকিৎসা সেবার অভাবে পূর্বে যেখানে গড়ে প্রতিদিন ৫০ শয্যার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮ থেকে ১০ জন রোগী ভর্তি থাকত। জরুরী ও বহিঃবিভাগে প্রতিদিন সর্বোচ ২’শ রোগী প্রাথমিক সেবা নিত।
চিকিৎসাক ও প্রয়োজনীয় ঔষধ না পেয়ে অনেক রোগীই অন্যত্র চলে যেত। এখন হাসপাতালের জরুরী, বহিঃবিভাগ ও ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসার জন্য বাহির থেকে কোন প্রকার ঔষধ কিনতে হয়না। রোগীদের চিকিৎসার জন্য এখন হাসপাতাল থেকেই সকল প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা ও ঔষধপত্র দেওয়া হয়। এসব কারনে এখন গড়ে প্রতিদিন ১২০ থেকে ১৫০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকে। জরুরী ও বহিঃবিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৪’শ রোগী প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে আসে।
সেবা নিতে আসা উপজেলার গলাকাটার মৃত আশরাফ হোসেনের ছেলে মকলেছ বলেন, ভ্যান থেকে পরে আমার পা মচকে যায়। অনেক ঔষধ খেয়েছি ভালো হয়না ডাক্তার দেখে বলে প্লাস্টার করতে হবে এতে সবমিলে ৭ হাজার টাকা প্রয়োজন। আমি গরীব মানুষ এত টাকা কোথায় পাব। পরে এ হাসপাতালের বড় ডাক্তারের কাছে আসি তিনি দেখে একটা কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বলেন, আগামী কাল আসবেন। ঔষধের দোকান থেকে ২’শ ১০ টাকায় ৩টা প্লাষ্টার কিনে ডাক্তারকে দেই।
তিনি আমার পা ব্যান্ডেজ করে দেয় এবং অনেকগুলো ঔষধ ও দিয়েছিল আজ ব্যান্ডেজ খুলে দিবে এজন্য এসেছি বলেন মকলেছ। পাঁচবিবি পৌর এলাকার দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী শিল্পী খাতুন সারা শরীরে ব্যাথা আরোগ্য লাভের আশায় বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছেন ডাক্তারও দেখিয়েছেন চিকিৎসাও নিয়েছেন এতে অনেক টাকা ব্যয়ও হয়েছে কাজের কাজ হয়নি। এ হাসপাতালের নতুন ডাক্তারের ভালো চিকিৎসার কথা অন্যের নিকট থেকে এসেছি বলেন, শিল্পী।
এমন সফলতার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সোলায়মান হোসেন মেহেদী বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে সাধারনত গ্রামের অভাবী ও গরীব মানুষেরাই বেশী আসে। তারা তেমন জটিল রোগ নিয়ে নয় সাধারনত মাথাব্যাথা, সর্দি-জ্বর, কাশি, আমাশয় ইত্যাদি কারনেই আসে তাদের একটু প্রাথমিক চিকিৎসা সহযোগিতা ও ঔষধ প্রদান করলেই তাদের রোগ ভালো হয় খুশিও হয়। আমি নিজেকে কখনো ডাক্তার মনে করিনা রোগীর সেবক মনে করি এবং যতদিন এ পেশায় থাকব ততদিন রোগীর সেবা করেই যাব বলেন, মানবিক ডাঃ মেহেদী।
জাগ্রত জয়পুরহাট