জয়পুরহাটের সজনে যাচ্ছে সারাদেশে
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং প্রাকৃতিক কোনও দূর্যোগ না হওয়ায় গত বছরের চেয়ে এবার জয়পুরহাটে সজনে ডাঁটার উৎপাদন ব্যাপক হারে বেড়েছে। ফলে জেলার ৫ উপজেলার হাটবাজারে প্রচুর পরিমাণে উঠছে সজনে ডাটা। মৌসুমের শুরুতে প্রতি কেজি ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে হাটবাজারে এর দাম কমে ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এক সময় বাড়ির আশপাশের সীমানায় সজনের গাছ লাগানো হতো। তবে সময় পরিক্রমায় এবং চাহিদা থাকায় কৃষকরা ফসলি জমিতে সজনের চাষ করছেন। পরিকল্পিতভাবে সজনের চাষ করে লাভবানও হচ্ছেন। স্থানীয় হাট-বাজার গুলোতে মুখরোচক ও পুষ্টিগুণে ভরপুর সজনে ডাটার চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। জানা গেছে, জয়পুরহাটে সজনে ডাটা বর্তমানে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
নতুনহাট বাজারের কাঁচা তরকারি বিক্রেতা বাবু বলেন, মৌসুমের শুরুতে এবছর ১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে সজনে। সময় বাড়ার সাথে সাথে এর দাম কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে বাজারে ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এই সবজির অনেক চাহিদা রয়েছে।
পাইকারি বিক্রেতা রবিয়ুল আলী বলেন, দেশের সব অঞ্চলে সজনে ডাঁটার চাহিদা রয়েছে। আমি প্রতিবছর চট্টগ্রাম-ঢাকা, নাটোর, ভোলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলাতে সজনে ডাঁটা সরবরাহ করে থাকি। এ বছর ঝড়-বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে সজনে ডাঁটার ফলন বেশি। গত বছরের তুলনায় এ বছর লাভও বেশি হচ্ছে।
সজনে চাষী সৌরভ কুমার জানান, সজনে চাষ করা অন্য গাছের চেয়ে সহজ। কারণ সজনের গাছের ডাল থেকে নতুন গাছের সৃষ্টি হয়। এ বছর ডাল রোপন করলে আগামী বছর গাছে ফলন হয়। বাড়তি খরচ হয় না।
তিনি বলেন, বাড়িতে বড় ৪-৫টা সজনে গাছ থাকলে বছরে ৭-৮ হাজার টাকা আয় করা যায়। আমার বাড়িতে ৬টা গাছ আছে। ফলনও বেশি হয়েছে। শুরুতে ভালো দাম পেয়েছি। এখনও দুইটা গাছে সজনে আছে। এই দাম থাকলে ৪ হাজার টাকা বেঁচতে পারবো। যদি বাণিজ্যিকভাবে সজনে ডাটা চাষ করা যায়। তাহলে এটি কৃষিতে অনেক সাফল্য বয়ে আনবে। একই সাথে অর্থনীতে অনেক ভূমিকা রাখবে।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সজনে একটি ডাটা জাতীয় সবজি হওয়ায় এর চাহিদা রয়েছে। এটি বিভিন্ন তরকারির সাথে রান্না করে খাওয়া যায়। সজনের ডাটায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন উপাদান রয়েছে।
সজনে চাষে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা না থাকলেও এটি জয়পুরহাটসহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপক উৎপাদন হয়। এই এলাকা থেকে সজনে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করে চাষি ও ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন।
জাগ্রত জয়পুরহাট