শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ১০:৩৭, ৮ অক্টোবর ২০২২

আক্কেলপুরে হঠাৎ বেড়েছে ‘চোখ উঠা রোগ"

আক্কেলপুরে হঠাৎ বেড়েছে ‘চোখ উঠা রোগ

কয়েকদিন আগে গায়ে জ্বর আর মাথা ও চোখঁ ব্যাথা শুরু হয়। গায়ের জ্বর ভাল না হতেই চোঁখ লালবর্ন ধারণ করে চোঁখ জ্বলতে থাকে। তখন বুঝতে পারি আমার চোঁখ উঠা রোগ হয়েছে। কথাগুলো বলছিলেন আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার সোনামুখি গ্রামের চোঁখ উঠা রোগী হেলাল উদ্দিন (৫০)।

আক্কেলপুর উপজেলায় হঠাৎ করে বেড়ে গেছে চোঁখ উঠা বা (কনজাংটিভাইটিস) রোগী। প্রতিবছর গ্রীষ্মে এ ভাইরাসজনিত ছোঁয়াচে রোগের দেখা মিললেও এবার শরতে বেড়েছে এ রোগের প্রকোপ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন সব বয়সের চোঁখ উঠা রোগী আসছেন চিকিৎসা নিতে। চিকিৎসকরা এ রোগের চিকিৎসা দিচ্ছেন। চিকিৎসকরা বলছেন,ভয়ের কোন কারণ নেই,ভাল চিকিৎসা পেলে রোগী সুস্থ্য হবেন। এদিকে আক্কেলপুর উপজেলায় এ রোগের প্রকোপ বাড়ায় বিভিন্ন স্কুল কলেজ কর্তৃপক্ষ আক্রান্ত ছাত্র-ছাত্রীদের সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত স্কুল-কলেজে আসতে নিষেধ করেছে।

চক্ষু বিশেষজ্ঞরা বলছেন,কারো চোঁখে তাকালেই চোঁখ উঠা রোগ হয় না। তবে এ রোগ ছোঁয়াচে,এ রোগের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির কোনো কিছু না ছোঁয়া ও তাদের ব্যবহারের জিনিস আলাদা করতে হবে। তবে করোনা পরবর্তী সময়ে যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালোভাবে তৈরি হয়নি, তারা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রেজানা গেছে, চোখ উঠাকে কনজাংটিভাইটিস বা রেড/পিংক আই বলে। অর্থাৎ কনজাংটিভা নামক চোখের পর্দায় প্রদাহ হলে তাকে চোঁখ উঠা রোগ বলা হয়। চোঁখ উঠার মূল কারণ ভাইরাসজনিত এবং এটি অতিমাত্রায় ছোঁয়াচে। আক্রান্ত কারও চোঁখে তাকালেই কারোর চোঁখ উঠে না। কারও কারও চোঁখ ওঠা হয়তো তিনদিনে ভালো হয়ে যায়। আবার অনেকের তিন সপ্তাহও লাগতে পারে। সেটা নির্ভর করে কাকে কোন ধরনের ভাইরাস আক্রান্ত করেছে এবং সেই রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কেমন তার ওপর।

আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেসথেসিয়া) ডা. কাজী আশিকুর রহমান বলেন, চোঁখে ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে চোঁখ ওঠে। যেমন কোভিড ভাইরাস হঠাৎ করে বেড়ে অসংখ্যা মানুষ এক সাথে কোভিড আক্রান্ত হয়েছিল ঠিক সেই রকম ভাবে চোঁখ উঠাও একটা ভাইরাস হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছে। একজন ব্যক্তির হলো পরিবারের সকল সদস্যরা আক্রান্ত হচ্ছে। এই রোগ হলে ভয়ের খুব একটা কারণ নেই। সাধারণত ৫-৭ দিনের মধ্যে এটা নিজে নিজেই সেরে ওঠে। এক্ষেত্রে যদি জ্বর আসে তাহলে প্যারাসিটামল এবং চুলকালে এলার্জির যেকোনো ঔষধ সাথে খেতে হবে এবং আরও কিছুপরীক্ষা-নিরীক্ষারও প্রয়োজন হতে পারে।

আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রাধেশ্যাম আগরওয়ালা বলেন, এই রোগটি এখন সারা দেশে রয়েছে। আতংক বা দুঃচিন্তার কিছু নেই। এটা এক সময় কমে আসবে। যারা আক্রান্ত হয়েছে তারা একটু সচেতন থাকলেই রোগটি থেকে সেরে উঠবেন। যদি বেশীদিন থাকে রোগীকে অবশ্যই চক্ষু বিশেষজ্ঞ সার্জন দেখিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।

জাগ্রত জয়পুরহাট

সর্বশেষ

জনপ্রিয়