রোববার   ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ || ২৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩০

প্রকাশিত: ০৫:০০, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কেন এত জনপ্রিয় জয়পুরহাটের লাল ভুনা, দিনে বিক্রি ৩ মণ

কেন এত জনপ্রিয় জয়পুরহাটের লাল ভুনা, দিনে বিক্রি ৩ মণ

ঐতিহ্যবাহী গরুর মাংসের কালা ভুনার জুড়ি নেই। তবে এই খাবারটি সারাদেশে সমাদৃত। কিন্তু আজিজুলের লাল ভুনা রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছে ভোজনরসিকদের। বলা হচ্ছে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর হাটে ভাতের হোটেল ব্যবসায়ীর কথা। কাপড় দিয়ে ঘেরা থাকায় অনেকে কৌতুক করে ‘হোটেল আল ঘিরাদিয়া’ বলেও ডাকেন। আজিজুলের হোটেল নামেই বেশি পরিচিত হোটেলটি। 

আজিজুল ইসলাম নওগাঁ সদর উপজেলার ধোপায়কুড়ি গ্রামের প্রয়াত রইস উদ্দিনের ছেলে। হোটেলটিতে আজিজুলসহ ১২ জন বাবুর্চি ও কর্মচারী কাজ করেন। আজিজুল গরিব মানুষের কাছে খাবারের দাম কম রাখেন। অনেককে বিনা মূল্যে ভাত-মাংস খাওয়ান। প্রতি হাটবারে গরুর তিন থেকে চার মণ মাংস আর তিন মণ চালের ভাত রান্না করেন আজিজুল। গরুর কষামাংস বেশি মসলায় গরম আঁচে দীর্ঘ সময় কষিয়ে নাম দেয়া হয়েছে গরুর লাল ভুনা। স্বাদের দিক দিয়ে এই ভুনার স্বাদ অতুলনীয়। তিলকপুর হাটে আজিজুলের খাবার হোটেল সারাদেশে পরিচিতি পেয়েছে এই লাল গরুর ভুনা মাংসের তরকারির মাধ্যমে।

আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর হাটে আজিজুলের খাবারের নাম-ডাক প্রায় দুই যুগ ধরে শোনা যাচ্ছে। নাটোর থেকে এসেছেন এক ব্যক্তি। তিনি একা নন, রীতি মতো দোকান খুঁজে শুধু একবেলার খাবার খেতে দূর-দূরান্ত থেকে এসেছেন ভোজনরসিকরা। বিভিন্ন সময় তারা বিভিন্ন স্থানের নামি জনপ্রিয় খাবার টেস্ট করে থাকেন। তিলকপুর হাটের আজিজুলের গরুর লাল ভুনা মাংস খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে বললেন, অসাধারণ খাবার।

খাবার খেতে খেতে কেউ ছবি তুলছেন, ভিডিও করছেন, সেসব আবার ফেসবুক-ইউটিউবে দিচ্ছেন। এভাবেই প্রচার ব্যাপ্তি বাড়ছে। আজিজুলকে দেখে আশ-পাশে আরও দুটি দোকান গড়ে উঠলেও নাম ডাক হয়নি তাদের। পৈত্রিক পুরোনো ব্যবসা বলতে আজিজুলের হোটেলের নাম-ডাক বেশ রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হোটেলের গরুর মাংসের লাল ভুনা খাবারের খ্যাতি ছড়িয়েছে এখন পুরো দেশজুড়ে। প্রতি হাটবার রোববার, বৃহস্পতিবার তাদের অন্তত এক হাজার ভোজন রসিকদের খাওয়াতে প্রয়োজন হয় তিন থেকে চার মণ মাংসের। আর চালেরও প্রয়োজন হয় তিন থেকে চার মণ। গরম ভাতের সঙ্গে গরুর লাল ভুনা চলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত।এক সময় আজিজুলের সংসারে ছিল অভাব অনটন, সেই আজিজুল এখন নিজের গরুর মাংসের লাল ভুনা বিক্রি করে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করেছে। সেই সঙ্গে তার হোটেলে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে অনেকের।

তার সঙ্গে কাজ করে খুশি সবাই।খাবার হোটেলের স্বত্বাধিকারী আজিজুল বলেন, এ ব্যবসা তার জন্য সৌভাগ্য বয়ে এনেছে। ১৯৭৫ সালে প্রথম এই তিলকপুর হাটের ভিতরে টিন শেডে ভাতের হোটেল করেন তার বাবা। তার বাবার মৃত্যুর পর প্রায় দুই যুগ ধরে ব্যবসার হাল ধরেছেন তিনি। তখন ৫ টাকা বাটি মাংস আর ভাত বিক্রি করেছেন ২ টাকা প্লেটে। সেই থেকে শুরু, তারপর থেকে ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। সপ্তাহে দুদিন হাটবারে সেই একবাটি মাংস ১২০ টাকা ও এক প্লেট ভাত ২০ টাকাতে বিক্রি হচ্ছে। এখন লাখ লাখ টাকার খাবার বিকিকিনি হচ্ছে তার হোটেলে। এই হোটেলের ওপর ভর করে আজিজুল বাড়ি করেছেন আর ১২ বিঘা জমি বন্ধক নিয়ে করছেন চাষাবাদ। সবই কিন্তু এই ভাতের হোটেল চালিয়ে। নিজের ভাগ্য, ছেলেদের ভবিষ্যৎ সবই গড়ছেন এই ভাতের হোটেলকে কেন্দ্র করে। বর্তমানে সাধারণ গরুর লাল ভুনা মাংসের কদর বেশি। তাই লাল ভুনা মাংসই বেশি রান্না করেন তিনি।

তিলকপুর হাটের ইজারাদার জি এম বাবলু বলেন, সাধারণ গরুর মাংসের একটি পদ অসাধারণ জনপ্রিয় করে তুলেছেন হোটেল ব্যবসায়ী আজিজুল। সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্তত চারবার তাদের ভাত ও মাংস রান্না করতে হচ্ছে। গরুর ভুনা প্রতি বাটি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা। আর ভাত প্রতি প্লেট ২০ টাকা। এই গরুর ভুনার জনপ্রিয়তা এতটাই তুঙ্গে যে, জেলার প্রায় সব ছোট-বড় সাপ্তাহিক হাট বাজারে এখন লাল ভুনার চল শুরু হয়েছে। পর্যটনের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে এই খাবারের বিশাল বাজার। যদিও গরুর ভুনা জয়পুরহাটেন প্রসিদ্ধ, যে দেশজুড়ে জনপ্রিয়তা এবং পরিচিতি পেয়েছে।

জাগ্রত জয়পুরহাট

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

শিরোনাম

জয়পুরহাটে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিতশিক্ষার্থীরা যাতে পিছিয়ে না থাকে সেটি নিশ্চিত করতে চাইঃ দীপু মনিক্ষতিকারক যেসব অ্যাপ প্লে স্টোর থেকে ডিলিট করল গুগলসায়মা ওয়াজেদ পুতুলের জন্মদিন আজবিনামূল্যে স্কুল চালিয়ে শিক্ষক পেলেন ১০ কোটি টাকা পুরস্কারআন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস আজসূর্যের বিরল ছবি তুলল ভারতের মহাকাশযান আদিত্যবিজয় দিবসে বিমানের টিকিটে ১৬ শতাংশ ছাড়প্রভাসের নায়িকা তৃপ্তি, বাজেট ৫২৬ কোটি টাকা?সোনিয়া গান্ধীকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানালেন মোদিড্র হওয়া সিরিজে সেরা স্বর্ণামনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আপিলের শেষ দিন আজকোপা আমেরিকা ২০২৪ : একনজরে দেখে নিন সূচিবৃষ্টি নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অধিদপ্তর