শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ || ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত: ০৭:১০, ১৫ জুন ২০২২

হজ-ওমরা একসঙ্গে করবেন যারা

হজ-ওমরা একসঙ্গে করবেন যারা

তিনভাবে হজ করা যায়। কেউ হজ মৌসুমে এক ইহরামে শুধু হজ করে। আবার কেউ আলাদা ইহরামে ওমরা-হজ করে। আবার কেউ এক ইহরামে একসঙ্গে হজ-ওমরা করে। এক ইহরামে একসঙ্গে যারা ওমরা-হজ করেন; তারা হলেন কিরান হজ আদায়কারী। কিরান হজ আদায়কারীর জন্য ১৪টি কাজ করতেই হবে। কষ্টকর এ হজ পালনে সতর্ক থাকতে হয়। কিরান হজ পালনকারীদের করণীয়গুলো তুলে ধরা হলো-

১. হজ ও ওমরার ইহরাম বাঁধা (ফরজ)

কিরান হজ পালনের জন্য হজ ও ওমরার ইহরাম একসঙ্গে বাঁধা ফরজ। হজ ও ওমরা উভয়টি আদায় করা ছাড়া ইহরাম থেকে বের হওয়া বা হালাল হওয়া যাবে না।

কিরান হজের নিয়ত

اَللَّهُمَّ لَبَّيْكَ حَجًّا وَ عُمْرَةً فَيَسِّرْهُ لِى وَ تَقَبَّلْهُ مِنِّى

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা হাজ্জান ওয়া ওমরাতান। ফাইয়াসসিরহু লি ওয়া তাকাব্বালহু মিননি।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি ওমরা ও হজ পালনের ইচ্ছা করছি; আপনি আমার জন্য তা সহজ করে দিন এবং তা কবুল করুন।’ অতঃপর উচ্চস্বরে ৪ ভাগে তালবিয়া পড়া। (১ বার তালবিয়া পড়া শর্ত)

لَبَّيْكَ اَللّهُمَّ لَبَّيْكَ – لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ – اِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ – لاَ شَرِيْكَ لَكَ

উচ্চারণ : ‘লাব্বাইকা আল্লা-হুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান্‌নিমাতা লাকা ওয়ালমুল্‌ক, লা শারিকা লাক।’

তালবিয়ার পর এ দোয়াটিও পড়া-

اَللَّهُمَّ اِنِّيْ اَسْئَلُكَ رِضَاكَ وَ الْجَنَّةَ وَ اَعُوْذُبِكَ مِنْ غَضَبِكَ وَ النَّارِ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা রিদাকা ওয়াল জান্নাতা ওয়া আউ’জুবিকা মিন গাদাবিকা ওয়ান্নারি’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার সন্তুষ্টি ও জান্নাতের আশা করছি এবং আপনার অসুন্তুষ্টি ও জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।’

মসজিদে হারামে প্রবেশের দোয়া

ওমরা উদ্দেশ্যে মসজিদে হারামে ডান পা দিয়ে প্রবেশ করে এ দোয়া পড়া-

بِسْمِ اللهِ وَ الصّلَاةُ وَ السَّلَامُ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ  أعُوْذُ بِاللهِ الْعَظِيْم وَ بِوَجْهِهِ الْكَرِيْمِ وَ سُلْطَانِهِ الْقَدِيْمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ  اَللهُمَّ افْتَحْ لِىْ اَبْوَابَ رَحَمَتِكَ

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা রাসুলিল্লাহ। আউজুবিল্লাহিল আজিম ওয়া বি-ওয়াজহিহিল কারিম ওয়া সুলতানিহিল কাদিমি মিনাশশায়ত্বানির রাজিম। আল্লাহুম্মাফতাহলি আবওয়াবা রাহমাতিকা।

কাবা ঘর দেখে এ দোয়া পড়া-

اَللَّهُمَّ أَنْتَ السّلَامُ وَ مِنْكَ السَّلَامُ حَيِّنَا رَبَّنَا بِالسَّلَامِ اَللَّهُمَّ زِدْ هَذَا الْبَيْتَ تَشْرِيْفاً وَ تَعْظِيْماً وَ تَكْرِيْماً وَ مَهَاَبَةً وَ زِدْ مَنْ شَرّفَهُ وَ كَرّمَهُ مِمَّنْ حَجَّهُ وَاعْتَمَرَهُ  تَشْرِيْفاً وَ تَعْظِيْماً وَ بِرُّا

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আংতাস সালামু ওয়া মিনকাস সালামু হাইয়্যিনা রাব্বানা বিস্‌সালাম। আল্লাহুম্মা যিদ হাজাল বাইতা তাশরিফান ওয়া তা’জিমান ওয়া তাকরিমান ওয়া মুহাবাতান; ওয়া জিদ মান শার্‌রাফাহু ওয়া কার্‌রামাহু মিম্মান হাজ্জাহু ওয়া’তামারাহু তাশরিফান ওয়া তাকরিমান ওয়া তা’জিমান ওয়া বির্‌রা।

২. ওমরার তাওয়াফ (ওয়াজিব)

কিরান হজ আদায়কারী আগে ওমরা করলে তাওয়াফ করা ওয়াজিব। এ তাওয়াফে ইজতিবা ও রমল করা আবশ্যক। কাবা শরিফ তাওয়াফের শুরুতে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন, ইসতেলাম (স্পর্শ) বা হাজরে আসওয়াদ বরাবর কোনায় দাঁড়িয়ে কাবার দিকে ফিরে দুই হাত দিয়ে ইশারা করে পুরুষরা ইজতিবা ও রমলসহ আর নারীরা সাধারণভাবে তাওয়াফ শুরু করবে আর এ দোয়া পড়া-

بِسْمِ اللهِ اَللهُ اَكْبَر - اَللَّهُمَّ اِيْمَنًا بِكَ و بصديقًا بِكِتَابِكَ وَرَفَعًا بِعَهْدِكَ وَ اِتِّبَعًا لِسُنَّةِ نَبِيِّكَ

উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার; আল্লাহুম্মা ইমানান বিকা ওয়া তাসদিকান বিকিতাবিকা ওয়া রাফাআন বিআহদিকা ওয়া ইত্তিবাআন লিসুন্নাতি নাবিয়্যিকা।’

তাওয়াফের সময় কাবা শরিফ ও হাজরে আসওয়াদকে বাম দিকে রেখে রোকনে শামি ও রোকনে ইরাকি অতিক্রম করে রোকনে ইয়ামেনিতে আসবে। এ স্থানে তালবিয়া, তাকবির-তাসবিহ ইত্যাদি পড়বে।

রোকনে ইয়ামেনি অতিক্রম করে এ দোয়া পড়া

এরপর (সম্ভব হলে) রোকনে ইয়ামেনি স্পর্শ করবে। সম্ভব না হলে দূর থেকে ইশারা করে হাজরে আসওয়াদের দিকে অগ্রসর হবে এবং কুরআনে শেখানো এ দোয়া পড়বে-

رَبَّنَا اَتِنَا فِى الدُّنْيَا حَسَنَةً وَّ فِى الْاَخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

উচ্চারণ : রাব্বানা আতিনা ফিদদুনিয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়াক্বিনা আজাবান্ নার।’

তাওয়াফে কুদুম (সুন্নাত)

মক্কায় আগমনকারী সব হাজিগণই তাওয়াফ করে থাকেন। হাজিদের জন্য এ তাওয়াফকে ‘তাওয়াফে কুদুম’ বলা হয়; যা আদায় করা (সুন্নাত)।

৩. সায়ী (ওয়াজিব)

ওমরা আদায়ের জন্য সাফা-মারওয়া পাহাড়ে সায়ী করা রোকন। তবে ক্বিরান হজ আদায়ের নিয়তকারীদের জন্য ওমরার সায়ীর পর চুল ছাঁটা, কাঁটা বা মুণ্ডন নিষেধ। বরং ইহরামের সব বিধান মেনে চলা। অর্থাৎ কিরান হজ আদায়কারীরা সব ধরনের নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। হজ সম্পন্ন করার আগ পর্যন্ত ইহরাম থেকে হালাল হতে পারবে না।

হজের প্রস্তুতি

জিলহজ মাসের ৭ তারিখ হারাম শরিফে হজের নিয়মাবলীর ওপর যে খুতবা দেয়া হবে, তা মনোযোগ দিয়ে শোনা বা হজের বিষয়াবলী বুঝে নেয়া। অতঃপর ৮ জিলহজ জোহরের নামাজের আগে মিনায় গিয়ে উপস্থিত হওয়া।

৪. মিনায় অবস্থান (সুন্নাত)

জিলহজ মাসের ৮ তারিখ জোহর থেকে ৯ তারিখ ফজর পর্যন্ত ৫ ওয়াক্ত (জোহর, আসর, মাগরিব, ইশা ও ফজর) নামাজ মিনায় পড়া (মুস্তাহাব) এবং তথায় অবস্থান করা (সুন্নাত)। ৯ জিলহজ ফজরের পর সম্ভব হলে গোসল অথবা অজু করে দুপুরের আগে আরাফাতের ময়দানে যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করা।

৫. আরাফার ময়দানে অবস্থান (ফরজ)

আরফায় অবস্থানই হজ। জিলহজ মাসের ৯ তারিখ জোহরের আগেই হজের অন্যতম রোকন পালনে আরাফার ময়দানে অবস্থান করা ফরজ কাজ। আর এটাই হলো হজের অন্যতম রোকন। ৯ জিলহজ সকালে মিনায় ফজরের নামাজ আদায় করে আরাফায় আসার প্রস্তুতি স্বরূপ গোসল করে একবার তাকবিরে তাশরিক পড়া-

اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَاَللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ وَلِلَّهِ الْحَمْدُ

‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার; ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’

তাকবিরে তাশরিক পড়ার পর তালবিয়া পড়া। পুরো তালবিয়াকে ৪ ভাগে (নিঃশ্বাসে) ৩ বার পাঠ করা-

لَبَّيْكَ اَللّهُمَّ لَبَّيْكَ - لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ - اِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ - لاَ شَرِيْكَ لَكَ

উচ্চারণ : লাব্বাইকা আল্লা-হুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান্‌নিমাতা লাকা ওয়ালমুল্‌ক, লা শারিকা লাক।

অর্থ :‘ আমি হাজির, হে আল্লাহ! আমি উপস্থিত! আপনার ডাকে সাড়া দিতে আমি হাজির। আপনার কোনো অংশীদার নেই। নিঃসন্দেহে সব প্রশংসা ও সম্পদরাজি তথা নেয়ামত আপনার এবং একচ্ছত্র আধিপত্যও আপনার। আপনার কোনো অংশীদার নেই ‘

হজের খুতবা শোনা

আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে হজের খুতবা শোনা এবং নিজ নিজ তাবুতে জোহর ও আসরের নামাজ নির্দিষ্ট সময়ে আলাদাভাবে আদায় করা। অতঃপর আরাফাতের ময়দান থেকে ৯ জিলহজ সুর্যাস্তের পর মাগরিবের নামাজ না পড়ে মুজদালিফার দিকে রওয়ানা হওয়া।

আরাফার ময়দানে দোয়া পড়া

আরাফাতের ময়দানে পড়ার জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো দোয়া নেই। তবে এ দোয়াটি বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রমাণিত বলে অনেকেই উল্লেখ করেন থাকেন-

لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ لَهُ المُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرً - اَللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ كَالَّذِىْ تَقُوْلُ وَ خَيْرًا مِمَّا نَقُوْلُ - اَللَّهُمَّ لَكَ صَلَاتِىْ وَ نُسُكِىْ وَ مَحْيَاىَ وَ مَمَاتِىْ وَ اِلَيْكَ مَأبِىْ وَ لَكَ رَبِّ تُرَاثِىْ - اَللَّهُمَّ اِنِّىْ اَعُوْذُبِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَ وَسْوَسَةِ الصَّدْرِ وَ شَتَاتِ الْاَمْرِ - اَللَّهُمَ اِنِّىْ أَسْئَلُكَ مِنْ خَيْرِ مَا تَجِىْءُ بِهِ الرِّيْحُ - اَللَّهُمَّ اجْعَلْ فِىْ قَلْبِىْ نُوْرًا وَّ فِىْ سَمْعِىْ نُوْرًا وَّ فِىْ بَصِرِىْ نُوْرًا- اَللَّهُمَّ اشْرَحْ لِىْ صَدْرِىْ وَ يَسِّرْلِىْ اَمْرِىْ وَ اَعُوْذُبِكَ مِنْ وَسَاوِسٍ فِىْ الصَّدْرِ وَشَتَاتِ الْاَمْرِ وَ عَذَابِ الْقَبْرِ

উচ্চারণ : লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির। আল্লাহুম্মা লাকাল হামদু কাল্লাজি তাকুলু ওয়া খাইরাম মিম্মা নাকুলু। আল্লাহুম্মা সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহইয়ায়া ওয়া মামাতি ওয়া ইলাইকা মাআবি ওয়া লাকা রাব্বি তুরাছি। আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল কাবরি ওয়া ওয়াসওয়াসাতিস সাদরি ওয়া শাতাতিল আমরি। আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন খাইরি মা তাঝিউবিহির রিহু। আল্লাহুম্মাঝআল ফি ক্বালবি নুরাও ওয়া ফি সাময়ি নুরাও ওয়া ফি বাসারি নুরা। আল্লাহুম্মাশরাহলি সাদরি ওয়া ইয়াসসিরলি আমরি ওয়া আউজুবিকা মিন ওয়াসায়িসিন ফিস সাদরি ওয়া শাতাতিল আমরি ওয়া আজাবিল ক্বাবরি।

৬. মুজদালিফায় অবস্থান (ওয়াজিব)

আরাফাতের ময়দান থেকে মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও ইশার নামাজ এক আজানে ও একই ইক্বামাতে একসঙ্গে আদায় করা। রাতে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করা (সুন্নাত)। এ রাতে কিছু সময় ঘুমানো এবং তাসবিহ-তাহলিল পড়া উত্তম।

১০ জিলহজ ফজরের নামাজের পর সূর্য ওঠার আগে কিছু সময় অবস্থান আবশ্যক। তবে ১০ জিলহজ ফজরের পর সুর্য ওঠার আগেই মুজদালিফা ত্যাগ করে মিনার উদ্দেশে রওয়ানা হতে হবে।

মুজদালিফা থেকে কংকর সংগ্রহ : মুজদালিফায় অবস্থানকালীন সময়ে কংকর সংগ্রহ করা।

৭. মিনায় কংকর নিক্ষেপ (প্রথম দিন)

১০ জিলহজ মুজদালিফা থেকে মিনায় এসে বড় জামরায় ৭টি (সাত) কংকর নিক্ষেপ করা (ওয়াজিব)। আর তা করতে হবে জোহরের আগে।

৮. কোরবানি করা (ওয়াজিব)

কংকর নিক্ষেপের পর মিনায় কোরবানির পশু জবাই করা অথবা ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা জমা দিয়ে জবাইয়ের সময় নিশ্চিত হওয়া জরুরি।

৯. মাথা মুণ্ডন করা (ওয়াজিব)

কোরবানি সম্পন্ন হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর মাথা হলক বা মুণ্ডন করার মাধ্যমে কিরান হজ পালনকারীরা নবিজীর আদর্শের অনুসরণ করবে। (ওয়াজিব)

সতর্কতা

১০ জিলহজ মিনায় জামরাতে আকাবায় কংকর নিক্ষেপ, কোরবানি এবং মাথা মুণ্ডনের মধ্যে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা জরুরি। মাথা মুণ্ডনের মাধ্যমে ইহরাম থেকে হালাল হয়ে যাবে। শুধুমাত্র শারীরিক সম্পর্ক (স্ত্রী সহবাস) ছাড়া সব কাজ করা যাবে।

১০. তাওয়াফে জিয়ারাত (ফরজ)

হজের সর্বশেষ রোকন হলো তাওয়াফে জিয়ারত। যা ১০ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগে সম্পন্ন করতে হবে। ১২ তারিখ সূর্যাস্তের আগে করতে না পারলে দম বা কোরবানি দিতে হবে।

১১. সাফা-মারওয়ায় সায়ী (ওয়াজিব)

তাওয়াফে কুদুমের সময় সায়ী করতে না পারলে তাওয়াফে জিয়ারতের পর সাফা-মারওয়ায় সায়ী করা ওয়াজিব।

১২. মিনায় কংকর নিক্ষেপ (ওয়াজিব)

১১ ও ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করা। উভয় দিন মিনায় হজ মন্ত্রণালয় ঘোষিত নির্ধারিত সময়ে ৩ জামরাতে ৭টি করে প্রতিদিন ২১টি কংকর নিক্ষেপ করা ওয়াজিব।

কংকর নিক্ষেপে প্রথমে ছোট জামরায় তারপর মধ্যম, অতঃপর বড় জামরায় কংকর নিক্ষেপ করা। সব ক্ষেত্রেই দুর্বল ও নারীদের জন্য রাতের বেলায় কংকর নিক্ষেপ করা উত্তম।

মিনায় রাত যাপন : ১০, ১১ ও ১২ জিলহজ মিনায় রাত যাপন করা (সুন্নাত)।

১৩ জিলহজ : যারা ১২ জিলহজ সুর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করবে না বা করতে পারবে না; তাদের জন্য রাতে মিনায় অবস্থান করা এবং ১৩ জিলহজ আরও ২১টি কংকর নিক্ষেপ করা। তবে এর মাঝে মক্কায় এসে তাওয়াফে জিয়ারাত সম্পন্ন করে আবার মিনায় যাওয়া।

১৩. মিনা ত্যাগ

১৩ জিলহজ মিনায় না থাকতে চাইলে ১২ জিলহজ সন্ধ্যার আগে মিনা ত্যাগ করতে হবে। সুর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করা উত্তম। ১২ তারিখ মিনা ত্যাগ না করলে ১৩ তারিখ মিনায় আরও ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবে। কেননা নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১৩ তারিখও কংকর নিক্ষেপ করেছিলেন।

১৪. বিদায়ী তাওয়াফ (ওয়াজিব)

সমগ্র বিশ্ব থেকে আগত সব হজপালনকারীর জন্য বিদায়ী তাওয়াফ করা ওয়াজিব। তবে হজ শেষে যে কোনো নফল তাওয়াফই বিদায়ী তাওয়াফে পরিণত হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এক ইহরামে ওমরা-হজ তথা হজে কিরান যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

জাগ্রত জয়পুরহাট

সর্বশেষ

জনপ্রিয়