শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ || ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রকাশিত: ১২:১৩, ১ জুলাই ২০২২

যেসব পশু কোরবানি করা যাবে ও যাবে না

যেসব পশু কোরবানি করা যাবে ও যাবে না

আর মাত্র কয়েকদিন পর কোরবানি। কোরবানি মুসলিমদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সামর্থ্যবান নারী-পুরুষের উপর কোরবানি ওয়াজিব। আদম (আ.) থেকে শুরু করে সব নবীর যুগেই কোরবানি পালিত হয়েছে। আল্লাহ ও তার রাসুলের শর্তহীন আনুগত্য, ত্যাগ ও বিসর্জনের শিক্ষাও আছে কোরবানিতে।

নবীজিকে আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ দিয়েছেন- আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি আদায় করুন। (সুরা কাওসার-২) অন্য আয়াতে- (হে রাসুল!) আপনি বলুন, আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন, আমার মরণ রাব্বুল আলামীনের জন্য উৎসর্গিত। (সুরা আনআম-১৬২) কোরবানি আদায়ের সব বিধান পাওয়া যাই কোরআন ও হাদিসের বর্ণনায়। আসন্ন কোরবানির জরুরি কিছু বিধান- 

কোরবানি দিতে হবে শরিয়ত যে ধরনের পশু পছন্দ করে। যেমন- উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদি দিয়ে। এ ধরনের পশুকে কোরআনের ভাষায় বলা হয় ‘বাহিমাতুল আনআম অর্থাৎ অহিংস্র গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু।’ 

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য কোরবানির নিয়ম নির্ধারণ করে দিয়েছি। জীবনোপকরণ স্বরূপ তাদের যেসব ‘বাহিমাতুল আনআম’ দিয়েছি সেগুলোর উপর তারা যেন আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।’ (সুরা হজ, আয়াত ৩৪।)

কোরবানির পশু কেমন হবে এ সম্পর্কে হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা চেষ্টা করবে কোরবানির জন্য নির্দিষ্ট বয়সের পশু নির্বাচন করতে। যদি না পাও তাহলে ছয় মাসের দুম্বা কোরবানি করতে পার। (মুসলিম)

উটের বয়স পাঁচ বছর, গরু বা মহিষ দুই বছর, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা এক বছরের হওয়া শর্ত। বয়স কম; কিন্তু দেখতে হৃষ্টপুষ্ট এমন পশু দিয়ে কোরবানি করা জায়েজ হওয়ার পক্ষে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন। রাসুল (সা.) উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ছাড়া অন্য কোনো পশু কোরবানি করেননি কিংবা অনুমোদনও করেননি। তাই এসব পশু দিয়েই কোরবানি করা সুন্নাত।

শরিয়তের পরামর্শ হলো, হৃষ্টপুষ্ট, বেশি গোশত, নিখুঁত এবং দেখতে সুন্দর পশু কোরবানি করা। কোরবানির পশু সব ধরনের দোষ-ত্রুটিমুক্ত হওয়া চাই। বারা ইবনে আজেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, চার ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি করা জায়েজ নয়। অন্ধ, রোগা, পঙ্গু এবং আহত।

নাসায়ির বর্ণনায় ‘আহত’ শব্দের জায়গায় ‘পাগল’ বলা হয়েছে। (সুনানে নাসায়ি) শিং ভাঙা, কান কাটা, লেজ কাটা, ওলান কাটা, লিঙ্গ কাটা ইত্যাদি ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি করাকে মাকরুহ বলেছেন ফকিহরা। ভেড়া, দুম্বা, ছাগল এসব পশু একজন কোরবানি করতে পারবেন। উট, গরু, মহিষ সর্বোচ্চ সাতজন কোরবানি করতে পারবেন।

হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা হুদাইবিয়ায় রাসুল (সা.) এর উপস্থিতিতে গরুর ও উট সাত ভাগের কোরবানি করেছি। (ইবনে মাজাহ) পশু জবাই করার সময় পশুকে খুব আদর করে কষ্ট না দিয়ে জবাই করার নির্দেশ দিয়েছেন রাসুল (সা.)।

হাদিসের আলোকে কোরবানির পশু হৃষ্টপুষ্ট হওয়া উত্তম। নবীজি ( সা.)  হৃষ্টপুষ্ট, নিখুঁত ও উত্তম পশু কোরবানি করতেন এবং খুঁতবিশিষ্ট পশু কোরবানি করতে নিষেধ করেছেন।

জাগ্রত জয়পুরহাট

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ