রোববার   ০২ নভেম্বর ২০২৫ || ১৭ কার্তিক ১৪৩২

জাগ্রত জয়পুরহাট

প্রকাশিত : ১২:১৪, ১ নভেম্বর ২০২৫

৩০ দিন ভাত-রুটি ছাড়লে যে পরিবর্তন আসবে

৩০ দিন ভাত-রুটি ছাড়লে যে পরিবর্তন আসবে
সংগৃহীত

ওজন কমাতে বা সুস্থ থাকতে অনেকেই এখন ভাত আর রুটি খাওয়া কমিয়ে দিচ্ছেন। কারণ এই দুই খাবারেই থাকে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট—যা শক্তি দেয় ঠিকই, কিন্তু বেশি পরিমাণে খেলে ওজনও বাড়ে। তবে যদি আপনি একটানা ৩০ দিন ভাত আর রুটি না খান, শরীরে কিছু স্পষ্ট পরিবর্তন দেখা যাবে। কিছু ভালো, আবার কিছুতে একটু সাবধান হওয়াও জরুরি।

চলুন জেনে নেওয়া যাক, এক মাস ভাত-রুটি বাদ দিলে শরীরে কী ঘটে—

শরীর চর্বি পুড়িয়ে শক্তি তৈরি করতে শুরু করে : ভাত-রুটি না খেলে শরীর শক্তির জন্য চর্বি ব্যবহার করতে শুরু করে। এই প্রক্রিয়াকে বলে কিটোসিস। প্রথমে একটু দুর্বল লাগতে পারে, কিন্তু কিছুদিন পর অনেকেই বলেন—আগের চেয়ে হালকা, সতেজ ও শক্তিময় লাগছে।

ওজন দ্রুত কমে : প্রথম সপ্তাহেই ১–২ কেজি পর্যন্ত ওজন কমতে পারে। তবে শুরুতে এই ওজন কমা মূলত পানি কমে যাওয়ার কারণে হয়। তারপরও এ পরিবর্তন দেখে অনেকেই আরও উৎসাহ পান।

রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে আসে : ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন সমস্যা যাদের আছে, তারা ভাত-রুটির বদলে ওটস, বার্লি বা মিলেট খেলে উপকার পাবেন। এসব খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, ফলে রক্তে চিনির ওঠানামা কম হয়।

হজমে পরিবর্তন আসে : অনেকে বলেন, ভাত-রুটি না খেলে পেট হালকা লাগে। তবে যথেষ্ট ফাইবার না পেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তাই প্রচুর সবজি, ফল, বাদাম ও বীজ খাওয়া জরুরি।

খিদে ও তৃষ্ণা বেড়ে যেতে পারে : ভাত-রুটি অনেকের জন্য মানসিক প্রশান্তির খাবার। হঠাৎ বাদ দিলে খিদে বা অস্থিরতা বেড়ে যেতে পারে। তখন ফল, দই, মিষ্টি আলু বা মুড়ির মতো হালকা বিকল্প বেছে নিতে পারেন।

কিছু পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে : ভাত ও রুটিতে থাকে ভিটামিন বি, আয়রন ও ম্যাগনেশিয়াম। তাই এগুলো বাদ দিলে মাল্টিগ্রেইন, রাগি, জোয়ার, আমরান্থের মতো খাবার দিয়ে সেই ঘাটতি পূরণ করা দরকার।

খাওয়ার অভ্যাসে সচেতনতা আসে : ৩০ দিন ভাত-রুটি বাদ দিলে বুঝতে পারবেন, আপনার খাওয়ার অভ্যাস কেমন ছিল। এটা আপনাকে ভবিষ্যতে আরও সচেতনভাবে খাবার বেছে নিতে সাহায্য করবে।

তাহলে ভাত-রুটি কি পুরোপুরি বাদ দেওয়া উচিত?

না, একেবারেই না। কার্বোহাইড্রেট শরীরের প্রধান শক্তির উৎস এবং মস্তিষ্কের কাজেও লাগে। তাই পুরোপুরি বাদ না দিয়ে বরং স্বাস্থ্যকর বিকল্প বেছে নিন—

- সাদা চালের বদলে ব্রাউন বা আতপ চাল

- সাধারণ আটার বদলে মাল্টিগ্রেইন বা রাগির আটা

- খাওয়ার সঙ্গে সবজি ও প্রোটিন (ডাল, ডিম, মাছ, পনির) রাখুন

স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে নিতে পারেন

মিলেট (রাগি, বাজরা, জোয়ার): ফাইবার ও খনিজে ভরপুর

কুইনোয়া, ডালিয়া, বাকউইট: পেট ভরায় ও পুষ্টিকর

ফুলকপির ভাত বা মিলেট রুটি: কম কার্বের চমৎকার বিকল্প

সবজি, ডাল ও শাক: পুষ্টি আর স্বাদে দারুণ

এক মাস ভাত-রুটি ছাড়া খেলে শরীর ও মন দুটোই নতুনভাবে অভ্যস্ত হতে শুরু করে। এতে ওজন কমে, শক্তি বাড়ে, আর নিজের খাওয়ার প্যাটার্ন সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি হয়।

তবে দীর্ঘমেয়াদে টেকসই ফল পেতে চাইলে ভারসাম্যই মূল কথা। কার্বোহাইড্রেটকে ভয় না পেয়ে, তাকে বুঝে-শুনে খাওয়াই আসল বুদ্ধিমানের কাজ।

সূত্র: কালবেলা

সর্বশেষ

শিরোনাম