শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪ || ১১ শ্রাবণ ১৪৩১

প্রকাশিত : ১১:৪৭, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩

ঘরের মাঠের সুবিধা সবাই নেয়, বাংলাদেশও নিচ্ছে: মিরাজ

ঘরের মাঠের সুবিধা সবাই নেয়, বাংলাদেশও নিচ্ছে: মিরাজ
সংগৃহীত

প্রথম দিনেই স্পিনের জাদু দেখেছে মিরপুরে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড টেস্ট। বাংলাদেশ ১৭২ রানে অলআউট হওয়ার পর নিউজিল্যান্ড দিন শেষ করতে করতে ৫৫ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে। এই ১৫ উইকেটের ১৩টিই স্পিনারদের, একটি পেসারদের। আর অন্যটি? মুশফিকের! মানে, মুশফিকের সেই হ্যান্ডলিং দ্য বল আর কী!

তা এমন স্পিনিং পিচে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝলক যিনি দেখান, সেই মেহেদি হাসান মিরাজ আজও জ্বলে উঠেছেন। দিনের শেষভাগে নিউজিল্যান্ডের ৩ উইকেট নিয়েছেন, বাকি দুটি নিয়েছেন তাইজুল। আলোকস্বল্পতায় ৭৯ ওভারেই দিনের খেলা শেষ না হলে মিরাজ-তাইজুলরা হয়তো আরও ভয়ংকর হয়ে উঠতেন!

সেই মিরাজই দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে বললেন, এই উইকেট ব্যাটসম্যানদের জন্য আরও ভালো হতে পারত! তবে এমন উইকেটে খেলা উচিৎ-অনুচিতের প্রশ্নে অবশ্য মিরাজের সোজা জবাব, বাকি সব দলই টেস্টে নিজেদের ঘরের মাঠের সুবিধা নেয়, বাংলাদেশও সেটাই নিচ্ছে।

উইকেটের বিশ্লেষণে শুরুতে মিরাজ বললেন, 'আমরা তো মিরপুরে খেলেছি এবং অভ্যস্ত। একটা জিনিস দেখেন, আমরা যখন বাইরের কন্ডিশনে খেলি, বাইরের দেশে খেলতে যাই, প্রত্যেকটা দল কিন্তু হোম অ্যাডভান্টেজ নিতে চায়। আমরাও একটু হোম অ্যাডভান্টেজ নেওয়ার চেষ্টা করেছি।'

এই সিরিজটি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ বলেই এখানে ঘরের মাঠের সুবিধা নেওয়ার গুরুত্ব আরও বেশি বলে জানালেন মিরাজ, 'এটা টেস্ট ক্রিকেট, আমরা এগিয়ে আছি। যদি আমরা জিততে পারি, পয়েন্ট টেবিলে হয়তো এগিয়ে থাকব। এটা কিন্তু টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের খেলা। আমরা যদি দুইটা ম্যাচ জিততে পারি, তাহলে কিন্তু আমাদের অবস্থান অনেক উপরে উঠে যাবে। তাই এভাবেই টিম কম্বিনেশন এবং এরকম দেশের যতটুকু অ্যাডভান্টেজ আছে, অবশ্যই আমরা সেটা নেওয়ার চেষ্টা করছি।'

বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড দুই দলের ব্যাটিংই আজ প্রথম দিনে বুঝিয়ে দিয়েছে, এই উইকেটে ব্যাটিং কঠিন। মিরাজ তা স্বীকার করছেন। তবে নতুন বলে ৩০ ওভার পেরিয়ে যাওয়ার পর ব্যাটিং কিছুটা সহজ হয়ে আসে বলে জানালেন। প্রথম দিকের ব্যাটসম্যানদের আরও দায়িত্ব নিয়ে খেলার কথাও বললেন। তবে এরপর যখন প্রশ্ন হলো, উইকেট আরেকটু ভালো হতে পারত কি না, মিরাজের উত্তর, 'আমার কাছে মনে হয়, উইকেট আরও বেটার কন্ডিশন হতে পারত ব্যাটসম্যানদের জন্য। ব্যাটসম্যানরা এসব উইকেটে অনেক ভোগে। বিশেষ করে আমরা যখন খেলি। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, এটা টিম ম্যানেজমেন্টের একটা পরিকল্পনা। যেহেতু আমরা এগিয়ে আছি, অবশ্যই এই সুবিধাটা নিতে চাইব।'

কিন্তু এমন উইকেটে খেলে দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশ দলের কোনো লাভ হচ্ছে কি না, সে বিতর্ক তো সব সময়ই থাকে। আন্তর্জাতিক ইভেন্টগুলোতে বাংলাদেশের ক্রমাগত ব্যর্থতার পেছনে দেশের মাটির এমন উইকেটের প্রভাব দেখেন অনেকেই। টেস্টে যদিও 'টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল' ছাড়া আন্তর্জাতিক ইভেন্টের কোনো হিসাব-নিকাশ নেই, সেখানে স্বাগতিকদের নিজের মাঠের সুবিধার হিসাব-নিকাশই থাকে। মিরাজও তা-ই বললে, 'আপনি যদি আমাদের ভালো উইকেট দেন, মানিয়ে নিতে হবে। খারাপ দিলেও মানিয়ে নিতে হবে। তবে হ্যা, ভালো উইকেটে খেললে দুয়েকটা ম্যাচ হারতে হারতে পরে বিদেশে গিয়ে ভালো করতে পারা সম্ভব হবে। কিন্তু আমরা টেস্ট ক্রিকেট খেলছি। এখানে একটু অ্যাডভান্টেজ নিতেই পারি।'

সাদা বলের ক্রিকেটে বরং এমন স্পিনিং উইকেটের বদলে স্পোর্টিং উইকেট চান মিরাজ, 'আমরা হয়তো সাদা বলে (ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি) ভালো উইেকটে খেলার চেষ্টা করব। কারণ সামনে অনেক বড় বড় টুর্নামেন্ট আছে। কিন্তু আগেও বলেছি, আমরা যদি প্রতিপক্ষকে অলআউটই না করতে পারি, তাহলে টেস্ট জেতা কঠিন। আমরা যখন দেশের বাইরে যাই, ভালো উইেকটে খেলি, তখনও হয়তো তাদের অলআউট করতে পারি। কিন্তু সেটা অনেক রান দিয়ে। তখন আমাদের জন্য অনেক কঠিন হয়। পরিস্থিতি একদিনে বদলাবে না। এটা আস্তে আস্তে মানিয়ে নিতে হবে।'

সূত্র: Independent Tv

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ