পাঁচবিবিতে ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা কৃষকের
পাঁচবিবি উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে এবার ২০২৪ এ কৃষকের কষ্টার্জিত ফসল ইরি বোরো ধানের আশানরুপ ফলনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষককূল। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটায় এবার অধিক ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানায় বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা।
স্থানীয় কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে ইরি, বোরো ধান চাষের পর এখনো কোন বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পরিনি আমরা, এটাই আল্লাহর নিকট হাজারো শুকরিয়া। আল্লাহ যদি আমাদের উপজেলায় কোন বড় ধরনের প্রকৃতিক দুর্যোগ না দেন, তাহলে আমরা ইরি বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছি। তবে কৃষকরা আরো জানায় গত বছরের তুলনায় এবার ইরি বোরো চাষে ব্যায় হয়েছে বেশী, ১বিঘা ইরি বোরো চাষ থেকে কাটামাড়া পর্যন্ত খরচ পরবে ১৩/১৪ হাজার টাকা, এ ফসলের মূল্য কৃষকের অনুকূলে থাকলে কিছুটা লাভের মুখ দেখবেন কৃষকরা। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে চাষিরা ক্ষেত থেকে ধান ঘরে তুলতে অধিক খরচের কারনে রীতিমত দুশ্চিন্তায় হিমশিম খাচ্ছে।
কৃষকদের সাথে কথা বলে আরো জানা যায়, খাটো জিড়া ধান প্রতি বিঘায় ২০-২২ মণ করে উৎপাদিত হচ্ছে। বিঘায় সব মিলিয়ে খরচ হয় ১৪ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় ৮৮ জাতের ও সুফল লতা জাতের ধান একই পরিমাণে উৎপাদিত হয়। পচারি ও পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষার্থে ফিট এম ইস্টা ঔষধ প্রয়োগ করতে হয়। এতে প্রতি বিঘায় খরচ হয় ৩০০ টাকা করে ও তার সাথে প্রয়োগ করতে হয় ভিত্তাকো প্রতি বিঘায় খরচ ২০০ টাকা। বাগজানার কৃষক সম্ভু চন্দ্র দাস বলেন। কৃষি অফিস থেকেও বীজ বিতরণ করে। বাগজানা ইউনিয়নের অরুণ চন্দ্র মহন্ত (খোকন) বলেন, বেশিরভাগ জমিতে ধান বেড়িয়ে গেছে তবে, যেসব জমিতে সরষে আবাদ করা হয়েছিল সেসব জমিতে ধান বেড় হতে আরো এক মাস সময় লাগবে। কৃষকেরা পোকা ও পচারী প্রতিরোধী ঔষধ প্রয়োগ করেছে। একই কথা বলেন বাগজানা গ্রামের ফজলু মন্ডল, চকশিমুলীয়া গ্রামের সোহান সহ এলাকার কৃষকগন।
বাগজানা গ্রামের কৃষক সাখাওয়াত হোসেন করতোয়াকে জানান, আমি ৫ বিঘা জমিতে ইরি ধানের আবাদ করেছি। পূর্বে সড়িষা চাষকৃত জমিগুলোতে দেরিতে ধান রোপন করা হয়েছে বিধায় এসব জমির ধান এখনো কাঁচা রয়েছে ও ফলন কিছুটা কম হবে। অপর দিকে যেসব জমিতে মৌসুমের শুরুতেই ধান রোপন করেছি, সেসব জমির ধান পরিপূর্ণ পেকে গেছে। তাই এখন কাটা শুরু করেছি তবে বাজারে ধানের দাম কম যাচ্ছে। এখন ১ হাজার থেকে ১১শত টাকা মণ দরে পাইকারী বিক্রি হচ্ছে। কিছুটা দাম বাড়লে ধান কাটা মাড়াই পুরোদমে শুরু করব।
বাগজানা গ্রামের অপর কৃষক রঘুনাথ জানান, ফলন বেশি হওয়ায়, আমি ৩ বিঘা জমিতে সাদা জিরা জাতের ধান চাষ করেছি। প্রতি বিঘা ধান মাড়াই ৫০০ টাকা ও কাটা ৪০০০ টাকা। প্রথম দিকে প্রতি মণ ধানের বিক্রয় মূল্য ছিলো ১২০০ টকা, কিন্তু এখন দাম কমে বিক্রি হচ্ছে ৮৬০-৯০০ টাকা দরে। পাঁচবিবিতে উপজেলা নির্বাচনের পরে ধানের দাম বাড়তে পারে বলে ধারনা করছে এলাকার কৃষকরা। আটাপুর ইউনিয়নের কৃষক জলিল জানায়, কাটাড়ি জাতের ফলন এবার সবচেয়ে ভাল হয়েছে। তবে জিরা জাতের ধানের ফলন কম।
পাঁচবিবি উপজেলা কৃষিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান বলেন, কোন রোগবালাই না থাকায় ও আবহাওয়া ভাল হওয়ায় কৃষকরা কাঙ্খিত ফলন আশা করছেন। এখনো আমাদের এলাকায় পুরোদমে ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়নি। কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, এবার উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের লক্ষ্যমাত্রা অনুয়ায়ী ১৯,৮৩৫ হেঃ জমিতে ইরি বোরো চাষ করা হয়েছে।