পঙ্গুত্ব থামাতে পারেনি জয়পুরহাটের রহিমের সংগ্রামী জীবন
দুই পা অচল হয়ে পড়া সত্ত্বেও জীবনযুদ্ধে থেমে নেই জয়পুরহাটের গ্রাফিক্স ডিজাইনার মো. আব্দুর রহিম। দুর্ঘটনার পর পঙ্গুত্ব এবং সংসারে মা, স্ত্রী ও সন্তানসহ পাঁচজনের দায়িত্ব থাকলেও তিনি হাল ছাড়েননি। নিয়মিত হুইলচেয়ারে বসেই কর্মস্থলে হাজির হয়ে ব্যানার, পোস্টার, লোগো ও বিজনেস কার্ড ডিজাইনের কাজ করে পরিবারের জীবিকা চালাচ্ছেন।
সম্প্রতি ধরা পরে, রহিম কিডনি সমস্যায় ভুগছেন। চিকিৎসা, পরীক্ষা এবং ওষুধের জন্য মাসে প্রায় ছয় হাজার টাকা খরচ হয়। পরিবারের খরচের পর এই ব্যয় তার জন্য চাপের হলেও তিনি মনোবল হারাননি।
রহিম বলেন, দুই পা অচল হলেও কাজ করার ইচ্ছা কখনও থেমে যায়নি। হোচিমিন ভাই এবং পাইলট ভাই শুধু বেতনই দেন না, যেকোন প্রয়োজনে মানসিক ও আর্থিকভাবে পাশে থাকেন। তাদের সমর্থনই আমাকে শক্তি যোগাচ্ছে।
দোকান মালিক পাইলট বলেন, রহিম আমাদের প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অসুস্থতার মধ্যেও তার দায়িত্ববোধ সত্যিই প্রশংসনীয়। সমাজের সামর্থ্যবানরা এগিয়ে এলে রহিমের মতো আরও মানুষ ভালোভাবে বাঁচতে পারবে।
প্রতিবেশীরা জানান, রহিমের প্রকৃত পরিচয় তার অদম্য ইচ্ছাশক্তি। সহযোগিতা পেলে তিনি সুস্থ হয়ে আবার বড় পরিসরে কাজ করতে সক্ষম হবেন এবং ভবিষ্যতে প্রতিবন্ধীদের জন্য কর্মসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. সাজেদুর রহমান জানান, রহিম এক প্রকৃত অনুপ্রেরণা। দুই পা অচল হলেও নিজের শ্রম ও মেধা দিয়ে তিনি পরিবারকে ভরসা দিয়েছেন এবং সমাজের জন্য উদাহরণ স্থাপন করেছেন।
দুই পা অচল, কিডনির কষ্ট এবং চলমান সংগ্রামের মধ্যেও আব্দুর রহিমের অদম্য সাহস, পরিশ্রম ও আত্মসম্মানই তাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। প্রমাণ করে দিয়েছেন—শরীরের সীমাবদ্ধতা মানুষকে থামাতে পারে না, ইচ্ছাশক্তিই বাস্তবকে জয় করতে পারে।













