ভুট্টা আবাদে ব্যস্ত কৃষক
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় ভুট্টা চাষে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকরা। দেশের সবচেয়ে বেশি আলু উৎপাদনশীল এ জেলায় কৃষকরা আলু তোলার পর তাদের জমি গুলোতে এখন ভুট্টা চাষ করছেন।
গত বছর রবি ও খড়ি মৌসুমে এক হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছিল। এবার রবি মৌসুমে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩২০ হেক্টর জমি। তবে গতকালের তথ্য অনুযায়ী ১৫৫ হেক্টর ভুট্টা আবাদ হয়েছে। মার্চের মাঝামাঝিতে খড়ি মৌসুম শুরু হবে। আলু তোলার পর জমিতে বাড়তি কোনো সার না লাগায় ভুট্টা উৎপাদনে তেমন কোনো খরচ হয় না। আলুতে প্রচুর পরিমানে সারের ব্যবহার হয়ে থাকে। এরপর সেই জমিতে সাধারণত ভুট্টা ভালো উৎপাদন হয় বলে জানান কৃষকরা। তাই ভুট্টা চাষে দিন দিন ঝুঁকছেন তারা।
আগে আলু তোলার পর জমিতে সাধারণত ধান, পাট ও তিল চাষ করতেন কৃষক। তবে পাটের চাহিদা কমে যাওয়ায় ধান ও তিল চাষে লাভবান না হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে ভুট্টা চাষে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গজারিয়া উপজেলায় কৃষি জমির আলু উঠতে শুরু করেছে। আলু উঠানোর পরেই কৃষক জমিগুলোতে আইল করে ভুট্টা আবাদ শুরু করেছেন।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, আলু আবাদের পর ভুট্টা আবাদে আর সার ও জমি চাষ দিতে হয় না। শুধু আইল করে বীজ পুঁতে ভুট্টা চাষ করা যায়।
ভুট্টা চাষি উপজেলার ইমামপুর ইউপির বাঘাইকান্দি গ্রামের কৃষক জসিম প্রধান বলেন, আমরা আগে আলুর পর ধান, পাট ও তিল চাষ করতাম। কিন্তুু এখন ভুট্টা চাষ করে লাভবান হচ্ছি। আগে ১ একর ধান চাষ করলে ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা লাভ হতো। অনেক সময় ধান বন্যার পানিতে ভেসে যেতো। এখন ভুট্টা চাষ করে প্রতি একরে ২৫ থেকে ২৬ হাজার টাকা লাভ হয়। সরকারি সহায়তায় ও পরামর্শ পেলে আরো ভালো ভুট্টা চাষ করা সম্ভব।
কৃষক জসিম প্রধান আরো বলেন, আমার নিজস্ব কোনো জমি নেই। প্রতি বছর গ্রামের পাশের ২ থেকে ৩ কানি জমি বর্গা নিয়ে চাষ করি। ভুট্টা আবাদে লাভ হয়। তাই কয়েক বছর ধরে ভুট্টা চাষ করছি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে জানা যায়, মুন্সিগঞ্জ জেলায় সব চেয়ে বেশি ভুট্টা গজারিয়া উপজেলায় আবাদ হয়। এখানকার ভুট্টা ভালো হয়। আলু তোলার পর এখানে কৃষকরা তাই ভুট্টা আবাদ করেন কয়েক বছর ধরে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক আহমেদ নূর জানান, এবার রবি মৌসুমে এ পর্যন্ত ১৫৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ করা হয়েছে। কৃষির রবি মৌসুম আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত। রবি মৌসুমের লক্ষ্যমাত্রা ৩২০ হেক্টর। আলু উঠার পর বাকি জমিতে ভুট্টা আবাদ করা হবে।
জাগ্রত জয়পুরহাট